‘সীমান্ত সংকট’ নিরসনে দেয়াল নির্মাণে বরাদ্দ চাইলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে বাড়তে থাকা ‘মানবিক ও নিরাপত্তা সংকট’ নিরসনে সেখানে দেয়াল নির্মাণ করতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2019, 05:08 AM
Updated : 9 Jan 2019, 05:08 AM

মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেওয়া ৮ মিনিটের ভাষণে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার অচলাবস্থার জন্য ডেমোক্রেটদের দায়ী করেছেন বলেও জানিয়েছে বিবিসি।

ওভাল অফিস থেকে দেওয়া এ ভাষণ যুক্তরাষ্ট্রের সব বড় বড় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে সম্প্রচারিত হয়।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে টেলিভিশনে দেওয়া প্রথম এ ভাষণে ট্রাম্প দেয়াল নির্মাণে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন বলে গুঞ্জন ছিল; যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট সে পথে হাঁটেননি।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, ডেমোক্রেটদের কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের অচলাবস্থা এখনো চলছে।

মেক্সিকো সীমান্তের পরিস্থিতিকে ‘মানবিক সংকট, হৃদয় ও আত্মার সংকট’ হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেছেন, নতুন করে উত্তর আমেরিকান রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে সেখান থেকে দেয়াল নির্মাণের অর্থ উঠে আসবে; যদিও চুক্তিটি এখনো অনুমোদিত হয়নি।

অর্থনীতিবিদরা ট্রাম্পের এ ধারণাকে খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া মাদক হেরোইনের ৯০ শতাংশই মেক্সিকো থেকে আসে বলেও জানান।

ডেমোক্রেটরা এখন সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বিরোধিতা করলেও এক যুগ আগে তারাই এর পক্ষে ছিল বলেও মনে করিয়ে দেন তিনি।

২০০৬ সালে সীমান্তের ৭০০ মাইলজুড়ে নিরাপত্তাবেষ্টনি নির্মাণের একটি প্রস্তাবে চাক শুমার, বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটন ও জো বাইডেনের সায় ছিল, জানিয়েছে বিবিসিও।

ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে ইস্পাতের দেয়াল নির্মাণে কংগ্রেসের কাছে মোট ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে যে কোনো মূল্যে এ দেয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ছিল তার।

ডেমোক্রেটরা বলছেন, তারা সাধারণ মানুষের করের টাকায় দেয়াল নির্মাণের পক্ষপাতী নন।

দুই পক্ষের এই অনড় অবস্থানের কারণে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের এক চতুর্থাংশ বিভাগ ও সংস্থায় দুই সপ্তাহর বেশি সময় ধরে অচলাবস্থা চলছে।

ট্রাম্পের বক্তব্যের পর শীর্ষ ডেমোক্রেট নেতারা দেয়াল নির্মাণের অর্থ পেতে ট্রাম্প মার্কিন জনগণকে জিম্মি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

১৮ দিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ অচলাবস্থার কারণে লাখ লাখ সরকারি কর্মী বেকার অবস্থায় বসে আছে।

ট্রাম্পের ভাষণের পর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি শিগগিরই অচলাবস্থা নিরসনে ব্যবস্থা নিতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

একই আহ্বান জানিয়েছেন সিনেটের সংখ্যালঘু অংশের নেতা চাক শুমারও।

“ট্রাম্প ভয় দেখিয়েছেন, তথ্য নয়। বিভেদ দেখিয়েছেন, একতা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতীক হওয়া উচিত স্ট্যাচু অব লিবার্টিই, ৩০ ফুটের দেয়াল নয়,” বলেছেন নিউ ইয়র্কের এ ডেমোক্রেট সিনেটর।