থাইল্যান্ডে হাজির সৌদি তরুণীর বাবা, দেখতে চান মেয়েকে

পরিবার থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুনের বাবা সেখানে হাজির হয়েছেন। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন তিনি।

>>রয়টার্স
Published : 8 Jan 2019, 02:08 PM
Updated : 8 Jan 2019, 02:08 PM

মঙ্গলবার একথা জানান থাইল্যান্ডের প্রধান অভিবাসন কর্মকর্তা সুরাচাত হাকপার্ন। তবে রাহাফের সঙ্গে দেখা করা কিংবা কথা বলতে হলে তার বাবা ও ভাইকে অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, এজন্য তাদেরকে জতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) অনুমতি পেতে হবে বলেও জানান হাকপার্ন।

রাহাফ এখন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তত্ত্বাবধানে আছেন। সোমবার রাতে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যাংকক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন রাহাফ। তাকে একটি নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য থাই পুলিশও তার সঙ্গে আছে।

পরিবারের সঙ্গে কুয়েত ভ্রমণে থাকার সময় গত শুক্রবার ১৮ বছরের তরুণী রাহাফ পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে তিনি ব্যাংকক বিমানবন্দরে যান। এখান থেকে তার অস্ট্রেলিয়াগামী ফ্লাইটে উঠার কথা ছিল।

কিন্তু ব্যাংকক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একজন কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করে বলে দাবি রাহাফের। সোমবার তাকে জোর করে কুয়েত ফেরত পাঠানো হতে পারে আশঙ্কায় মরিয়া রাহাফ নিজের অবস্থার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নেন।

সোমবার সকালে রাহাফকে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়ার আয়োজন করেছিল থাইল্যান্ড। তা আটকাতে রোববার থেকেই নিজেকে হোটেল কক্ষে আবদ্ধ করে রাহাফ ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানান।

পরে ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তারা তাকে নিজেদের জিম্মায় নেয়। মঙ্গলবার ইউএনএইচসিআর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা রাহাফের ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন।

রাহাফ পরিবার থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডে যান এবং তার আশঙ্কা পরিবারের কাছে ফেরত পাঠালে তারা তাকে হত্যা করবে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন রাহাফের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপ পরিচালক ফিল রবার্টসন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “তার বাবা এখন থাইল্যান্ডে, এটা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। তিনি কী করবেন তার কোনো ধারণা আমাদের নেই। হতে পারে তিনি রাহাফকে খুঁজে বের করে হেনেস্তা করবেন। এটা করার জন্য তিনি সৌদি দূতাবাসে যেয়ে তাদের সাহায্য চাইতে পারেন।”

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাটি রাহাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা ও তৃতীয় কোনো দেশে তার আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

“প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। থাই কর্তৃপক্ষ যে তাকে (রাহাফ) ফেরত না পাঠিয়ে সুরক্ষা দিতে রাজি হয়েছেন সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ,” এক বিবৃতিতে বলেছেন ইউএনএইচসিআরের থাই প্রতিনিধি গুইসেপ্পে দে ভিনসেন্তিস।