সৌদি তরুণীকে ফেরত পাঠাবে না থাইল্যান্ড

নিরাপত্তা বিবেচনায় পরিবার থেকে পালিয়ে আসা সৌদি আরবের তরুণীকে ফেরত পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ড পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2019, 02:56 PM
Updated : 7 Jan 2019, 02:56 PM

সোমবার বিকালে থাইল্যান্ড ইমিগ্রেশন পুলিশ প্রধান বলেন, “আমরা ওই তরুণীকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

“সে এখন থাইল্যান্ডের ভূখণ্ডে আছে। কোনো ব্যক্তি বা কোনো দূতাবাস তাকে কোথাও যেতে বাধ্য করতে পারবে না। আমরা তার সঙ্গে কথা বলব এবং সে যে অনুরোধ করবে সেই অনুযায়ী কাজ করব। কষ্ট থেকে বাঁচতেই সে পালিয়েছে এবং আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছে…. আমরা কাউকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে কোথাও পাঠাব না।”

পরিবারের সঙ্গে কুয়েত ভ্রমণে থাকার সময় গত শুক্রবার ১৮ বছরের তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে তিনি ব্যাংকক বিমানবন্দরে যান। এখান থেকে তার অস্ট্রেলিয়াগামী ফ্লাইটে উঠার কথা ছিল।

কিন্তু ব্যাংকক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একজন কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করে বলে দাবি রাহাফের। সোমবার তাকে জোর করে কুয়েত ফেরত পাঠানো হতে পারে আশঙ্কায় মরিয়া রাহাফ নিজের অবস্থার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নেন।

টুইটারে নিজের ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি প্রকাশ করে বলেন, কুয়েতে পাঠানো হলে তার পরিবার তাকে সেখান থেকে সৌদি আরব নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে। রাহাফ জানান, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করায় পরিবার তার উপর ক্রদ্ধ হয়েছে।

থাইল্যান্ড বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শুরুতে তাকে কুয়েত ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অনুরোধ উপেক্ষা করে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) রাহাফকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা বাদ দিতে থাইল্যান্ডকে অনুরোধ করে। এরপরই এদিন বিকেলে থাই অভিবাসন পুলিশ প্রধান জানান, রাহাফকে আপাতত ফেরত না পাঠিয়ে থাইল্যান্ডে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকক বিমানবন্দরে আটকা পড়ার পর সেখানকার একটি হোটেলে অবস্থান করছেন রাহাফ। কুয়েত ফিরে যাওয়া এড়াতে সোমাবার তিনি হোটেল কক্ষে নিজেকে আবদ্ধ  করে রাখেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি না পেলে তিনি কক্ষ থেকে বের হবে না বলেও জানান।

সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ইউএনএইচসিআর থেকে এক টুইটে বলা হয়, “ব্যাংককে আমাদের সুরক্ষা দল হোটেলে রাহাফের সঙ্গে আলোচনা করছে।”

থাইল্যান্ড জাতিসংঘের ‘রিফিউজি কনভেনশন’ চুক্তিতে সাক্ষর করেনি। যে কারণে সেখানে শরণার্থীদের কোনো আইনি সুবিধা তারা দিতে পারে না। যদিও দেশটিতে এক লাখের বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।