পরিবার থেকে পালাতে গিয়ে ব্যাংককে আটকা সৌদি তরুণী

থাইল্যান্ডের ব্যাংকক বিমানবন্দরে আটকা পড়া সৌদি আরবের এক তরুণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে বলেছেন, হয়ত তার পরিবার তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে ‘হত্যা করবে’।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2019, 03:39 PM
Updated : 6 Jan 2019, 03:39 PM

পরিবারের সঙ্গে কুয়েত ভ্রমণে থাকার সময় দু’দিন আগে পালিয়ে যাওয়া ১৮ বছরের রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন আশ্রয় প্রার্থনার জন্য ব্যাংকক হয়ে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।

কিন্তু ব্যাংকক বিমানবন্দরে সৌদি আরবের একজন কূটনীতিক তার সঙ্গে দেখা করে তার পাসপোর্ট জব্দ করে বলে দাবি রাহাফের। এখান থেকেই তার অস্ট্রেলিয়াগামী দ্বিতীয় ফ্লাইটে উঠার কথা ছিল।

এবিসি নিউজ জানায়, রাহাফকে ব্যাংকক বিমানবন্দরের ভেতরে একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে সৌদি দূতাবাস ও কুয়েত এয়ারলাইন্সের লোকজন তাকে দেখে গেছে বলেও জানান রাহাফ।

রাহাফের আশঙ্কা সোমবার তাকে জোর করে কুয়েত ফেরত পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে সৌদি আরব নিয়ে গিয়ে তার পরিবার তাকে হত্যা করবে।

মরিয়া রাহাফ নিজের অবস্থার কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আশ্রয় নেন।

টুইটারে নিজের ছবি ও পাসপোর্টের ফটোকপি প্রকাশ করে লেখেন, “যেহেতু এখন আমার হারানোর কিছু নেই, তাই আমি আমার আসল নাম এবং সব তথ্য প্রকাশ করছি। আমার নাম রাহাফ মোহাম্মদ মুতলাক আল-কুনুন এবং এটা আমার ছবি।

“আমার আশঙ্কা, আমার পরিবার আমাকে হত্যা করবে।”

সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী কোনো নারী তার পুরুষ অভিভাবক ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন না।

যদিও বিবিসি’কে রাহাফ বলেন, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন। তাই তার পরিবার তার উপর ক্ষুব্ধ।

থাই পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, রাহাফ নিজের বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছেন।“যেহেতু তার থাইল্যান্ডের ভিসা ছিল না, তাই পুলিশ তাকে এখানে প্রবেশে বাধা দেয়। কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে সে এখানে এসেছে, ওই এয়ারলাইন্সেই তাকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।”

রাহাফের পাসপোর্ট জব্দ করার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান ওই কর্মকতা।

এবিসি নিউজের পক্ষ থেকে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো জবাব দেয়নি।

এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে সৌদি আরবের আরেক তরুণী অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

দিনা আলি লাসলুম (২৪) কুয়েত থেকে ফিলিপিন্স হয়ে অস্ট্রেলিয়া যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ম্যানিলা বিমানবন্দর থেকে তার পরিবার তাকে সৌদি আরব নিয়ে যায়।

তিনিও ‘পরিবার তাকে হত্যা করতে পারে’বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।দিনার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা আর জানা যায়নি।