বিবিসি জানায়, ২৭ বছরের ওই নারীর নাম জেনিফার ডব্লিউ। তিনি এবং তার স্বামী ২০১৫ সালে আইএসর নিয়ন্ত্রণে থাকা মসুলে ওই শিশুটিকে গৃহকাজের জন্য ‘দাস’ হিসেবে তাদের বাড়িতে এনেছিলেন।
মিউনিখের জঙ্গি দমন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে জেনিফারের স্বামী তাকে বাড়ির বাইরে চেইন দিয়ে বেঁধে রাখে। জেনিফার শিশুটিকে বাঁচাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তারা বলেন, “অসুস্থ হয়ে পড়ার পর শিশুটি তার বিছানায় প্রস্রাব করে দিয়েছিল। এর শাস্তি হিসেবে ওই নারীর স্বামী তাকে প্রখর রোদে বাইরে বেঁধে রাখে, তৃষ্ণায় শিশুটি মারা যায়। অভিযুক্ত নিজের স্বামীকে এটা করতে দিয়েছিলেন, শিশুটিকে বাঁচাতে তিনি কোনো উদ্যোগই নেননি।”
জেনিফারের বিরুদ্ধে হত্যা এবং অস্ত্র আইনেও অভিযোগ দায়ে করা হবে। দোষীসাব্যস্ত হলে তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
যুদ্ধবন্দি নিহত শিশুটি খুব সম্ভবত ইরাকের সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের ছিল বলে ধারণা জার্মান সংবাদমাধ্যমের।
২০১৪ সালে জেনিফার ইরাকে যান এবং আইএসে যোগ দেন।
একটি কালাশনিকভ রাইফেল এবং বিস্ফোরক বেল্ট হাতে তিনি আইএস ঘোষিত ‘নৈতিক পুলিশের’ কাজ করতেন।
তিনি মসুল ও ফাল্লুজা ছাড়াও আইএস নিয়ন্ত্রিত অন্যন্যা নগরীতে টহল দিতেন।
কৌঁসুলীরা বলেন, “আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নারীরা জঙ্গিদলটির জারি করা আচরণবিধি মেনে চলছে কিনা বা পোশাক পরছে কিনা সেটা দেখা জেনিফারের কাজ ছিল।”
শিশুটিতে হত্যার কয়েক মাস পর নিজের কাগজপত্র নবায়ন করতে জেনিফার আঙ্কারায় জার্মান দূতাবাসে গেলে তুরস্কের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হওয়ায় তুরস্ক আদালতে তিনি ছাড়া পেয়ে যান এবং তাকে জার্মানিতে বিতাড়ন করা হয়।
এ বছর জুনে তিনি আবারও সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে জার্মান পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তারপর থেকেই তিনি আটক আছেন।
জেনিফারের বিরুদ্ধে শুনানি শুরুর তারিখ এখনও দেওয়া হয়নি।
গত বছর মুসলের নিয়ন্ত্রণ হারা আইএস। তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইরাক ও সিরিয়ায় তাণ্ডব চালানো আইএস জঙ্গিদের তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় সব অঞ্চল থেকেই হঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।