পেঁয়াজে ‘কমছে’ মোদীর ভোট

ভারতে কয়েক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজ ও আলুর দাম দ্রুত কমতে থাকায় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 28 Dec 2018, 10:02 AM
Updated : 28 Dec 2018, 10:02 AM

ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া কৃষকরা বলছেন, আগামী বছর দেশটির জাতীয় নির্বাচনে এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মূল্য দিতে হবে।

শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অতীতেও দেশটিতে পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার কারণে নির্বাচনে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে দেখা গেছে।

পেঁয়াজ ও আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় এক কোটি ৩০ লাখ মানুষের দেশ ভারতের গ্রামীণ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির বেশিরভাগ মানুষের বাস গ্রামে।

গত সপ্তাহে রয়টার্সের পক্ষ থেকে ভারত জুড়ে শতাধিক কৃষকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।

ওই সাক্ষাৎকারে মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে (বিজেপি) বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের অসন্তোষ ফুটে উঠেছে।  তারা বলেন, বিজেপি সরকার গ্রামের মানুষদের আয় বাড়াতে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি।

ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় মহারাষ্ট্রে।

মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষী মধুকর নাগরে বলেন, “আগামী কয়েক মাসে তারা যাই করুক, আমি বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেব। আমি ২০১৪ সালে করা ভুলের পুনরাবৃত্তি করব না।”

১৯৯৮ সালেও পেঁয়াজের দামের অস্বাভাবিক পতনের কারণে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল বিজেপি।

গত কয়েক সপ্তাহে কৃষকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ এক রুপিরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। যেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে তাদের আট রুপির বেশি খরচ হয়েছে।

অস্বাভাবিক মূল্যহ্রাসের প্রতিবাদে কৃষকরা রাস্তায় টন টন পেঁয়াজ ঢেলে মহাসড়ক অবরোধ করছে।

যদিও পেঁয়াজের এই মূল্য হ্রাসের সুবিধা ভোক্তারা তেমন একটা পাচ্ছে না। বরং মধ্যস্বত্বভোগীরাই সব লাভ নিয়ে যাচ্ছে।

গত মৌসুমে উৎপন্ন পেঁয়াজ এখনো বাজারে থাকায় এবং মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দেওয়াই দাম পড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে আলু চাষীদের একই সংকটে পড়তে হয়েছে।  ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপির জয়ে উত্তর প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশের অধিকাংশ ভোটার গ্রামে বাস করে। ভারতের পার্লামেন্টে ৫৪৫ সদস্যের নিম্নেকক্ষের ১২৮ জন এই দুই রাজ্য থেকে নির্বাচিত হন।

সেক্ষেত্রে এই দুই রাজ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়লে আগামী বছর মে মাসের জাতীয় নির্বাচনে ‘হারের মুখে পড়তে পারে’ মোদীর দল।