কনসার্ট চলার মাঝেই আছড়ে পড়ল সুনামি

ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালিতে সুনামির ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কনসার্টের মঞ্চ। সমুদ্রের ধারে জনপ্রিয় ব্যান্ড সেভেনটিনের রক গানের কনসার্ট চলার মাঝেই আছড়ে পড়ে সুনামির প্রচণ্ড ঢেউ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2018, 02:11 PM
Updated : 23 Dec 2018, 03:11 PM

সুনামির ধাক্কার সে ভয়াবহতা ধরা পড়েছে রোববার স্যোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি ভিডিও ফুটেজে। এতে দেখা গেছে, মঞ্চে গান বাজনা চলছে। দর্শকরা হাততালি দিচ্ছে। এসময় হঠাৎই ঢেউ আছড়ে পড়লে সবাই চিৎকার-চেচাঁমেচি শুরু করে।

ইন্দোনেশিয়ার বানতেন প্রদেশের একটি সৈকতে চলছিল এ কনসার্ট, আলোর নাচন আর ব্যান্ড গানের তালে তালে হাততালি দিয়ে আনন্দ করতে থাকা দর্শকরা বুঝতেও পারেনি কী বিপদ ধেয়ে আসছে তাদের দিকে।

শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালীর আশপাশের সৈকতগুলোতে সুনামি আছড়ে পড়ে। বানতেন প্রদেশের পান্দেগলাংয়ের তানজুং লেসুং সৈকতে তখন রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের(পিএলএন) আয়োজনে ২শ’ কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য চলছিল বর্ষ বিদায়ের পার্টি। তাতেই হচ্ছিল এ কনসার্ট। তার মধ্যেই মঞ্চের পেছন দিক থেকে আসা বিশালকার ঢেউ সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

তবে স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া সেই মুহূর্তের ওই ভিডিও ফুটেজটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

 

টুইটারে সেভেন্টিন ব্যান্ডের সদস্য জ্যাক তার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বলেন, “পানির নিচে আমি শুধু প্রার্থনা করছিলাম, যিশু সাহায্য করুন! শেষ কয়েক সেকেন্ডে আমার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছিল।” পানির আঘাতে ভেঙে পড়া মঞ্চের একটি অংশ ধরে তিনি প্রাণ বাঁচান বলে জানান।

সুনামিতে এখন পর্যন্ত ২২২ জনের মৃত্যু, ৮৪৩ জন আহত এবং ২৮ জন নিখোঁজ থাকার তথ্য দিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।

নিহতদের মধ্যে ব্যান্ডদলটির চার সদস্যও রয়েছেন। তারা হলেনঃ বেজ গিটারিস্ট এম আওয়াল ‘বানি’ পূর্বানি, রোড ম্যানেজার ওকি উইজায়া, গিটারিস্ট হারমেন সিকুমবাং এবং ক্রু মেম্বার উজাং।

এছাড়া, তাদের ড্রামবাদক এখনো নিখোঁজ বলে ব্যান্ডদলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তারা জাকার্তা ফিরতে পারছেন না বলেও টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান।

দলের প্রধান গায়ক রাফিয়ান ‘ইফান’ ফজরশাহ নিজের ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, “আমরা বানি ও আমাদের রোড ম্যানেজার ওকিকে হারিয়েছি।”

অন্যদিকে পিএলএন’র পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ২৯ কর্মী ও পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু এবং ১৩ জন নিখোঁজ থাকার কথা জানানো হয়েছে।