নিজের ছেলেকে দত্তক নেওয়ার অনুমতি পেলেন সমকামী বাবা

আইভিএফ পদ্ধতি গ্রহণ করে একজন সারোগেট মায়ের মাধ্যমে জন্ম দেওয়া নিজের ছেলেকে দত্তক নেওয়ার অনুমতি পেয়েছেন সিঙ্গাপুরের একজন সমকামী চিকিৎসক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2018, 05:48 AM
Updated : 18 Dec 2018, 06:14 AM

অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থার দেশটির উচ্চ আদালতের দেওয়া এই রায়কে মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

নিম্ন আদালতে বিফল হওয়ার পর উচ্চ আদালতে প্রায় এক বছর ধরে আইনী লড়াই চালিয়ে সফল হন ওই চিকিৎসক।

আইভিএফ পদ্ধতি গ্রহণ করে মার্কিন সারোগেট মায়ের গর্ভ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শিশুটির জন্ম হয়েছিল।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী কোনো সমকামী ব্যক্তি সন্তান দত্তক নিতে পারেন না। এ কারণে চিকিৎসক ও তার সঙ্গী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এক নারীকে দুই লাখ মার্কিন ডলার দেওয়ার চুক্তিতে তাদের সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তার গর্ভ ভাড়া নেন।

কিন্তু সন্তান হওয়ার পর তাকে দেশে আনা নিয়ে ফের আইনী জটিলতা সৃষ্টি হয়। সিঙ্গাপুরের আইনে আইভিএফ পদ্ধতি গ্রহণ করে অবিবাহিত কারো সন্তান জন্ম দেওয়ার অনুমতি নেই।

এ পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালে ওই চিকিৎসক আদালতে নিজের ছেলেকে দত্তক নেওয়ার আবেদন জানান। ওই বছরের শেষ দিকে আদালত তার আবেদন বাতিল করে দেয়।

“আইনের কারণে তার জন্য সামনের দরজা বন্ধ ছিল, তাই নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তিনি পেছনের দরজা দিয়ে হাঁটার চেষ্টা করেছেন,”রায়ে বলেছিলেন বিচারপতি।

এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন ওই চিকিৎসক।

সোমবার দেওয়া রায়ে সিঙ্গাপুরের প্রধান বিচারপতি সুন্দরেশ মেনন বলেন, “সমকামী পরিবার গঠন নিয়ে চলমান বিতর্ক এবং এ বিষয়ে সরকারের নীতি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না তা নিয়ে আমরা নিশ্চিতভাবেই খুব সজাগ। এছাড়া, আমাদের এই রায় দেশের দত্তক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না তা নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন।

“কিন্তু এতসব কারণ থাকার সত্ত্বেও আমরা শিশুটির কল্যাণ নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধ এবং এই কারণগুলো সেই দায় এড়িয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলেই আমাদের মনে হয়েছে।”

সিঙ্গাপুরে উপনিবেশ আমলে তৈরি আইন অনুযায়ী সমকামী ব্যক্তিদের যৌনমিলন অপরাধ বলে গণ্য হয় এবং এজন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে।

উচ্চ আদালতের এই রায় উপনিবেশ আমলের তৈরি আইনের সংস্কার নিয়ে দেশটির সরকারকে ভাবতে বাধ্য কারবে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। একই আইন ভারতেও ছিল, চলতি বছর তারা তা বাতিল করেছে।