স্ট্রাসবুর্গ ‘হামলাকারী’ পুলিশের গুলিতে নিহত

ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ক্রিসমাস মার্কেটের কাছে সন্ত্রাসী হামলার সন্দেহভাজন বন্দুকধারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2018, 04:56 AM
Updated : 14 Dec 2018, 10:22 AM

বৃহস্পতিবার ফ্রেঞ্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, স্ট্রাসবুর্গের রাস্তায় পুলিশের একটি ইউনিটের সঙ্গে গোলাগুলির এক পর্যায়ে ২৯ বছর বয়সী শেইফ শিকাতের মৃত্যু হয়।

এ বন্দুকধারীই প্রথম পুলিশের দিকে গুলি ছুড়েছিল বলেও জানিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার প্লেস ক্লিভের ক্রিসমাস মার্কেটের কাছে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই সন্দেহভাজন এ যুবককে ধরতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর শত শত সদস্যের অভিযান চলছিল, জানিয়েছে বিবিসি।

শিকাতের বিরুদ্ধে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানিতে চুরিসহ বেশকিছু ছোটখাট অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। জেলে থাকা অবস্থাতেই তিনি উগ্রবাদে দীক্ষিত হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 ফরাসী সন্ত্রাসবাদবিরোধী কৌঁসুলি রেমি হেইৎজ জানান, মঙ্গলবারের হামলার সময়ও এ যুবক ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করেছিলেন।

বন্দুক ও ছুরি হাতে থাকা শিকাত পরে এক ট্যাক্সিচালককে জিম্মি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

পথে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গেও একদফা গোলাগুলি হয় তার। সেসময় তার বাহুতে গুলি লাগে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

শিকাতের নির্দেশে ট্যাক্সিচালক পরে তাকে ন্যুডর্ফ থানার কাছে নামিয়ে দিলে সেখানে পুলিশের দিকে গুলি ছুড়ে ফের পালান এ যুবক।

ন্যুডর্ফে তার অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে পুলিশ একটি গ্রেনেড, একটি রাইফেল, চারটি ছুরি ও গোলাবারুদের সন্ধান পায়।

জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) পরিচালিত বার্তা সংস্থা আমাক পরে শিকাতকে ‘আইএসের সৈনিক’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেয়। সিরিয়া ও ইরাকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে হামলায় অংশ নেওয়া দেশগুলোতে পাল্টা হামলার নির্দেশেই শিকাত ওই ঘটনা ঘটান বলেও দাবি তাদের।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী খ্রিস্তোফ কাস্তেনেয়ার জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ন্যুডর্ফ এলাকার রু দো লাজারে সড়কে শিকাতের মতো এক যুবককে দেখতে পেয়ে তিন পুলিশ তাকে থামতে বলে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই যুবক গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে।

বৃহস্পতিবার সকালেও পুলিশ ন্যুডর্ফে অভিযান চালায়। যদিও তাতে ফল পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবারের হামলার পর পুলিশ শিকাতের বাবা-মা ও দুই ভাইসহ চারজনকে গ্রেপ্তারও করে।

নিহত তিনজনের পরিচয়ও জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। এদের মধ্যে স্ট্রাসবুর্গের ৬১ বছর বয়সী সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তাও আছেন।

তিন সন্তানের বাবা আফগানিস্তান থেকে আসা কামাল নক্সবন্দীর মৃত্যু হয় হাসপাতালে। তৃতীয় ব্যক্তিটি স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা এক থাই পর্যটক। ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম অনুপং সুয়েবসামার্ন বলে জানিয়েছে থাই সংবাদমাধ্যম।

স্ট্রাসবুর্গের মেয়র রোলান্ড রিস জানান, শিকাতের সন্ধান পাওয়ায় মানুষের উদ্বেগ দূর হয়েছে; স্ট্রাসবুর্গও ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে।