পুলিশের কাছে লেখা চিঠিতে হানিফা বলে, তার বাবা তার সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছে। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। সে আরও লেখে, বাইরে টয়লেট করতে তার ‘লজ্জা লাগে’।
ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ৫ কোটি মানুষ এখনও টয়লেট ব্যবহার করে না। এমনকি কারো কারো বাড়িতে শৌচাগার থাকার পরও তারা খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিল নাড়ুর ছোট্ট শহর আম্বুরে বাবা-মার সঙ্গে বাস করে হানিফা। তাদের বাড়িতে কোনো টয়লেট নেই, কখনো ছিলও না।
সে বিবিসিকে বলে, তার এলাকায় খুব কম মানুষের বাড়িতে টয়লেট আছে। সে তার বাবাকে বাড়িতে একটি টয়লেট বানিয়ে দিতে বলেছিল।
“আমার খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে লজ্জা লাগে। যখন লোকজন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে আমরা খুব খারাপ বোধ হয়।”
দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া হানিফা চিঠিতে লিখেছে, “আমার বাবা আমাকে বলেছিল যদি আমি ক্লাসে প্রথম হই তবে আমাকে টয়লেট বানিয়ে দেবে। আমি নার্সারি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাসে প্রথম হয়েছি। অথচ এখনও সে বলছে করে দিব। এ এক ধরণের প্রতারণা, তাই দয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করুন।”
হানিফার বাবা এহসানুল্লাহ বিবিসি’কে বলেন, তিনি টয়লেট নির্মাণ শুরু করলেও অর্থাভাবে তা শেষ করতে পারেননি।
“আমি এখন বেকার। তাই হানিফাকে বলেছিলাম আমাকে আরেকটু সময় দিতে। কিন্তু নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে না পারায় সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে।”
এর পরও রাগ না কমার ব্যাখ্যায় হানিফা বলে, “আমি আর কতদিন তাকে একই কথা বলব? সে সব সময়ে আমাকে একই অজুহাত দেয়, তার টাকা নেই। তাই আমি পুলিশের কাছে গেছি।”
হানিফা সোমবার তার মায়ের সঙ্গে তার স্কুলের কাছের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।
পুলিশ কর্মকর্তা এ ভালামারথি বলেন, “সে ব্যাগ ভর্তি করে ট্রফি ও মেরিট সার্টিফিকেট নিয়ে আসে এবং আমার টেবিলে সেগুলো সাজিয়ে রাখে। সে আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমি তাকে একটা টয়লেট বানিয়ে দিতে পারব কিনা?”
হানিফার এ সাহসী উদ্যোগে দারুণ খুশি ভালামারথি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।