হুয়াওয়ে সিএফওর জামিন

কানাডার আদালত চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝৌকে জামিন দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2018, 08:06 AM
Updated : 12 Dec 2018, 08:06 AM

তিন দিনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার ১ কোটি কানাডিয়ান ডলারে তার জামিন হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শর্ত অনুযায়ী ৪৬ বছর বয়সী এ নারীকে পায়ের গোড়ালিতে সার্বক্ষণিক একটি নজরদারি ডিভাইস পরে থাকতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সমর্পণ করা হবে কিনা, এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত ভ্যাঙ্কুবারে নিজের বাড়িতেই রাত ১১টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত অবস্থান করতে হবে হুয়াওয়ের এ শীর্ষ নির্বাহীকে। বাইরে বের হলে সঙ্গে নিতে হবে পাহারায় নিয়োজিত রক্ষীদের।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আদালতের বিচারক মেংকে জামিনের অর্থের ৭ লাখ কানাডিয়ান ডলার নগদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন; বাকি তিন লাখ ডলারের জামিন হয়েছেন কানাডায় থাকা মেংয়ের ৫ বন্ধু।

হুয়াওয়ের এ শীর্ষ নির্বাহীকে নিয়ে বেইজিং-ওয়াশিংটনর টানাপোড়ের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ সংক্রান্ত মামলায় ‘প্রয়োজনে হস্তক্ষেপ’ করারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেওয়া মন্তব্যে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বিবেচনায় মেংয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি আপাত স্থগিত রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।

মেংয়ের গ্রেপ্তারের ‘বদলায়’ চীন এরই মধ্যে কানাডার এক সাবেক কূটনীতিককে আটক করেছে বলেও খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের। মাইকেল করভিগ নামের ওই কূটনীতিকের আটক বিষয়ে কানাডার চীনা দূতাবাসের তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার আদালতে হুয়াওয়ে সিএফওর জামিন মঞ্জুর হলে তাৎক্ষণিকভাবে আদালত কক্ষ করতালির শব্দে ভরে ওঠে। আনন্দে আইনজীবীদের জড়িয়ে ধরেন মেং।

গত ১ ডিসেম্বর ভ্যাঙ্কুবারে বিমান বদলানোর সময় কানাডার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার এ মেয়ের বিরুদ্ধে বহুজাতিক বিভিন্ন ব্যাংককে ইরানের সঙ্গে লেনদেন বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওইসব ভুল তথ্যের জন্য ব্যাংকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ইরান নিষেধাজ্ঞা লংঘন ও বিশাল অংকের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। 

মেংকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা, তা নিয়ে কানাডায় মামলা চলছে। বিচারক ওই বহিঃসমর্পণের পক্ষে রায় দিলে হুয়াওয়ের এ শীর্ষ নির্বাহীকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে কিনা সে বিষয়ে কানাডার বিচারমন্ত্রীকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে হবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে প্রতিটি অভিযোগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে  মেংয়ের সর্বোচ্চ ৩০ বছর করে কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এ চীনা নাগরিককে আটকের ঘটনায় অটোয়া ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের উত্তেজনা আরও প্রকাশ্য হয়েছে। মেংকে ছেড়ে দেওয়া না হলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে চীন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কও করেছে।

ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের বিরতির সম্ভাবনায়ও এই ঘটনা কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা।

মেংয়ের পরিবার জানিয়েছে, তারা ভ্যাঙ্কুবারের আদালতের জামিনের সিদ্ধান্তে আনন্দিত। হুয়াওয়ের এ সিএফওর স্বামী বলেছেন, তিনি তাদের মেয়েকে কানাডায় মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছেন।

৪৬ বছর বয়সী মেংকে আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ফের কানাডার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।