ভেনিজুয়েলায় রুশ বোমারু বিমান, ওয়াশিংটনের উদ্বেগ

পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম রাশিয়ার দুইটি বোমারু বিমান ভেনিজুয়েলায় অবতরণ করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2018, 05:57 AM
Updated : 12 Dec 2018, 05:57 AM

ঘরের কাছে লাতিনে মস্কোর এ সামরিক উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সোমবার আরও দুটি সামরিক বিমানসহ রাশিয়ার দুইটি দূর পাল্লার টিইউ-১৬০ বোমারু বিমান ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের কাছে ‘মাইকুয়েতিয়া বিমানবন্দরে’ অবতরণ করে।

পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এ  টিইউ-১৬০ বিমানগুলো আন্তর্জাতিক মহলে ‘সাদা রাজহাঁস’ নামে পরিচিত। এটি একবার জ্বালানি নিয়ে টানা ১২ হাজার মাইল দূরত্ব উড়ে যেতে সক্ষম।

গত দশকেও এই ধরনের বিমানগুলো অন্তত দুইবার ভেনিজুয়েলায় অবতরণ করেছিল। ২০১৩ সালেও রাশিয়ার একজোড়া জঙ্গিবিমান ভেনিজুয়েলায় নেমেছিল।

মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভেনিজুয়েলার নিকোলাস মাদুরোর মধ্যে বৈঠকের কয়েকদিনের মধ্যে ১০ হাজার মাইল উড়ে সোমবার ফের কারাকাসে নামল ‘সাদা রাজহাঁস’। এবারের বিমান দুটিতে কোনো পরমাণু অস্ত্র আছে কিনা ক্রেমলিন কিংবা ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেউই বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

রুশ এ বোমারু বিমানের উপস্থিতি ভেনিজুয়েলার বামপন্থি প্রশাসনকে উদ্দীপ্ত করবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের মিত্রদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক গভীর করতে পুতিনের আগ্রহের বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মাদুরো দীর্ঘদিন ধরে তাকে উৎখাতে মার্কিন প্রশাসনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে আসছিলেন। ভেনিজুয়েলার ‘জনগণের সংগ্রামকে’ বিজয়ী করতে মিত্রদেশগুলোর সাহায্যও ধারাবাহিকভাবে চেয়ে আসছিলেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির তীব্র অর্থনৈতিক সংকটেও চীন ও রাশিয়া পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

সোমবার ভেনিজুয়েলায় দুটি রুশ টিইউ-১৬০র অবতরণ যুক্তরাষ্ট্রের লাতিন নীতিতে প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঘরের কাছে এ রুশ সামরিক উপস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও টুইটারে তার ক্ষোভ জানাতেও দেরি করেননি। বলেছেন, এ থেকেই ‘দুই দুর্নীতিবাজ সরকারের জনগণের তহবিল লুটের’  বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে।

পম্পেওর মন্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ অসঙ্গত’ ও ‘মাত্রাতিরিক্তভাবে অ-কূটনৈতিক’ বলেছে রুশ সরকার।

“এমন একটি দেশ আমাদের সম্বন্ধে মন্তব্য করেছে, যাদের প্রতিরক্ষা বাজেটের অর্ধেক দিয়েই পুরো আফ্রিকার অন্ন সংস্থান সম্ভব,” বলেছেন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।

ভেনিজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাশিয়ার বিমান বাহিনীর সঙ্গে তার দেশের সামরিক বাহিনীর মহড়ার কথাও জানিয়েছেন।

“আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে এটা (মহড়া) করতে যাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে  আমাদের বন্ধু আছে, যারা সম্পর্কে সম্মানজনক ভারসাম্য বজায় রাখে। এবং আমরা ভেনিজুয়েলার শেষ ইঞ্চি মাটি রক্ষা করতে প্রস্তুত,” বলেন ভ্লাদিমির পাদরিনো।

এর আগে রোববার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ফের যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভেনিজুয়েলাকে অস্থিতিশীল করে তোলার অভিযোগ আনেন। 

“সরাসরি হোয়াইট হাউজের তত্ত্বাবধানে ভেনিজুয়েলার গণতান্ত্রিক জীবন বিনষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন সরকারকে উৎখাতের জন্য অভ্যূত্থানের চেষ্টাও করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।