হুয়াওয়ের সিএফওর জামিন ঝুলিয়ে রাখল কানাডার আদালত

চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝৌয়ের জামিনের শুনানি ফের মুলতবি করেছে কানাডার আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2018, 09:24 AM
Updated : 11 Dec 2018, 09:24 AM

সোমবার কানাডার প্রাদেশিক আদালতের বিচারক মেংয়ের জামিন বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে শুনানি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত স্থগিত করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভ্যাঙ্কুবারে গত ১ ডিসেম্বর বিমান বদলানোর সময় গ্রেপ্তার হওয়া মেং যুক্তরাষ্ট্রে বহিঃসমর্পণের মুখোমুখি হতে পারেন।

তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ইরানে কাজ চালিয়ে যাওয়া হুয়াওয়ের একটি প্রতিষ্ঠান বিষয়ে বহুজাতিক ব্যাংকগুলোকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এর মাধ্যমে ওই ব্যাংকগুলোও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লংঘনের ঝুঁকিতে পড়েছিল; নিষেধাজ্ঞা লংঘন করেছে এমনটি প্রমাণিত হলে ব্যাংকগুলোকে বড় ধরনের ক্ষতিপূরণও দিতে হত বলে আদালতের নথিতে জানানো হয়েছে।

৪৬ বছর বয়সী মেং হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইয়ের কন্যা। নিজেকে নিষ্পাপ দাবি করা এ চীনা নাগরিক বলেছেন, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হলে তিনি সেখানেও তার বিরুদ্ধে হওয়া সব অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন।

উচ্চরক্তচাপসহ স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কথাও জানান হুয়াওয়ে এ নির্বাহী।

সোমবার কানাডার আদালতের বিচারক মেংয়ের জামিন শুনানি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত মুলতুবি করেন। জামিন দেওয়া হলে হুয়াওয়ের এ নির্বাহীর কর্মকাণ্ডের দায় কার ওপর বর্তাবে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও শুনানির প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মেংয়ের আইনজীবী ডেভিড মার্টিন জামিন আবেদনে বলেন, তার মক্কেল যে পালিয়ে যাবেন না এটি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টার অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্র দিয়ে নজরদারি করা হোক।

জামিনদার হিসেবে মেংয়ের স্বামীর নাম এবং দেড় কোটি কানাডিয়ান ডলার জমা রাখারও প্রস্তাব দেন তিনি।

ভ্যাঙ্কুবার তথা ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার নাগরিক না হওয়ায় মেংয়ের স্বামী জামিনদার হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম কি না, কিংবা স্ত্রী জামিনের শর্ত লংঘন করলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি করা যাবে কি না তা নিয়ে কানাডার সরকারি কৌঁসুলি ও বিচারক সন্দেহ প্রকাশ করেন।

হুয়াওয়ের এ সিএফওকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় কানাডার সঙ্গে চীনের সম্পর্কের টানাপোড়েনও বাড়ছে। মেংকে দ্রুত মুক্তি না দিলে অটোয়াকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকিও দিয়েছে বেইজিং।

মেংকে গ্রেপ্তার ও বহিঃসমর্পণের সম্ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে এ শঙ্কায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন শেয়ারবাজারে অস্থিরতাও দেখা যাচ্ছে। দেশ দুটি সম্প্রতি আগামী বছরের মার্চের ১ তারিখ পর্যন্ত বাণিজ্য যুদ্ধে বিরতি দিতে সম্মত হয়েছিল।

তার মধ্যেই হুয়াওয়ের এ প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনাটি ঘটল।

ওয়াশিংটন ও বেইজিং অবশ্য শুরু থেকেই বাণিজ্য বিরোধ ও মেংয়ের বিষয়টি আলাদাভাবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়ে আসছে।