হুমকির মুখে আবারও ঘর ছাড়া আফগানিস্তানের 'মেসি বালক'

তালেবান হুমকির মুখে দ্বিতীয়বারের মত পরিবারের সঙ্গে বাড়ি ঘর ছেড়ে পথে নামতে হয়েছে আফগানিস্তানের ‘মেসি বালক’ মুর্তজা আহমাদিকে, তার বয়স এখন সাত বছর।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2018, 10:27 AM
Updated : 7 Dec 2018, 10:39 AM

ফুটবল তারকা আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসির ‘সবচেয়ে বড় ভক্ত’ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যে দারুণ পরিচিতি পেয়েছিল।

২০১৬ সালে নীল-সাদা পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে বানানো মেসির আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি পরা এক বালকের ছবি অনলাইনে ভাইরাল হয়। ছবির ওই ছোট্ট  বালক আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশের পাঁচ বছরের মুর্তজা পরে বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি পেয়েছিল।

মুর্তজাকে প্রিয় তারকার জার্সি কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য তার পরিবারের নেই। তার ভাই নীল-সাদা পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে জার্সির মতো কিছু একটা বানিয়ে কলম দিয়ে পেছনে ১০ নম্বর সংখ্যাটা এঁকে দিয়েছিল।

পেছন থেকে তোলা মুর্তজার ছবিটিই আলোড়ন তোলে বিশ্বে। কিন্তু চেহারা না দেখা যাওয়ায় ছবির ছেলেটির পরিচয় সম্পর্কে প্রথমে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে আরও কয়েকটি ছবির মাধ্যমে তার সম্পর্কে জানা যায়।

মুর্তজার এই ভালোবাসা স্বংয় মেসিকেও কাঁপিয়ে দিয়েছিল। তিনি প্রথমে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মাধ্যমে মুর্তজার জন্য নিজের সই করা দুইটি জার্সি পাঠান।

পরে কাতারে ক্ষুদে এই ভক্তের সঙ্গে দেখা করেন মেসি। ২০১৬ সালের শেষ দিকে দোহায় একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার সময় মুর্তজাকে সেখানে ডেকে নিয়েছিলেন মেসি।

যদিও এতে দরিদ্র মুর্তজার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং মেসির জার্সি পাঠানোর পর ‘হয়তো টাকাও পাঠিয়েছে’ ভেবে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণের হুমকি দেয়।

ছেলের জন্য পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে আতঙ্কে তার দরিদ্র কৃষক বাবা আরিফ আহমাদি ২০১৬ সালে জাগুরি গ্রাম ছেড়ে প্রতিবেশী পাকিস্তানে পালিয়ে যান। শুরুতে মুর্তজার পরিবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু জীবনযাপন ব্যয় বেশি হওয়ায় পরে তারা কোয়েটায় চলে যায়। কিন্তু অর্থাভাবে সেখানেও জীবন যাপন অসম্ভব হয়ে পড়লে তারা ঝুঁকি মাথায় নিয়েই বাড়ি ফিরে যায়।

কিন্তু সম্প্রতি তালেবান জঙ্গিরা গজনি প্রদেশে আক্রমণ করলে আবারও ঘর ছাড়া হয় মুর্তজা পরিবার। তারা রাজধানী কাবুলে পালিয়ে গেছে বলে জানায় বিবিসি।