বুধবার বেলগ্রেডে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
পূর্ণাঙ্গ সেনাবাহিনীর বিষয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বর কসোভোর পার্লামেন্টে ভোটাভুটির কথা আছে, তার আগে সার্বিয়ার দিক থেকে আনুষ্ঠানিক এ হুমকি এল বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
দুই দশক আগে সার্ব শাসনের বিরুদ্ধে কসোভোর আলবেনীয়রা ফুঁসে উঠেছিল। দেশটিতে এখন ৪ হাজার সদস্যের ছোট একটি সেনাবাহিনী রয়েছে।
নেটো ও অন্যান্য মিত্র দেশগুলোর পরামর্শ উপেক্ষা করে আলবেনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ কসোভোর পার্লামেন্ট সামনের সপ্তাহের ভোটে সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়ে একটি ‘পূর্ণাঙ্গ সেনাবাহিনী’ গড়ার পথে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে।
পূর্ণ একটি সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে কয়েক বছর লাগলেও সার্বিয়া বলছে, কসোভোতে বসবাস করা সংখ্যালঘু সার্বদের উচ্ছেদের চিন্তা থেকেই আলবেনীয় সাংসদদের এ ভাবনা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহায়তার ওপর নির্ভরশীল কসোভোর নেতারা শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
“কখনোই সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতে হবে না, এটিই প্রত্যাশা আমার। এখন টেবিলে থাকা বিকল্পগুলোর মধ্যে এটি থাকছেই। কেননা আমরা জাতিগত নিধনযজ্ঞ দেখতে চাই না,” বলেছেন ব্রানাবিচ।
২৮ হাজার সদস্যের সার্ব সেনাবাহিনী কসোভোতে কোনো ধরনের অভিযান চালালে তা বেলগ্রেডের ইইউয়ে ঢোকার রাস্তায় কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা। ব্রানাবিচের মন্তব্য সার্ব জাতীয়তাবাদকে ফের উসকে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করা কসোভোর সঙ্গে সার্বিয়ার সম্পর্ক এমনিতেই উত্তেজনাপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংগঠন ইন্টারপোলে কসোভোর অন্তর্ভূক্তির বিরুদ্ধে বেলগ্রেডের লবিংয়ের পাল্টায় গত মাস থেকে দেশটির পণ্যের ওপর প্রিস্টিনার (কসোভোর প্রশাসনিক কেন্দ্র) ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের রেষারেষি আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
নেটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টল্টেনবার্গও এই মুহুর্তে কসোভোর পূর্ণাঙ্গ সেনাবাহিনী গঠনের পক্ষে নন।
“বেশিরভাগ নেটো মিত্রই এ পদক্ষেপের বিরোধীতা করছে। ভবিষ্যৎতে ইউরো-আটলান্টিকে কসোভোর অন্তভুক্তির ক্ষেত্রেও এটি গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে,” ব্রাসেলসে বলেছেন স্টল্টেনবার্গ।
প্রিস্টিনা সার্বিয়ার ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছে তাকে ‘বিভেদ সৃষ্টিকারী’ হিসেবেও অভিহিতি করেছেন তিনি। এই পদক্ষেপ ইউরোপের মধ্যস্থতায় সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে আলোচনাকে ‘আরও জটিল করে তুলবে’ বলেও মন্তব্য এ নেটো কর্মকর্তার।
শুল্কের কারণে কসোভোর সঙ্গে সার্বিয়ার বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন ব্রানাবিচ। প্রিস্টিনার ঘোষণায় প্রতি মাসে তার দেশের অতিরিক্ত ৪ কোটি ২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ বাড়বে বলেও জানান তিনি।
কসোভোর শুল্কের পাল্টায় সার্বিয়া এখন পর্যন্ত পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়নি।