ইন্দোনেশিয়ায় ‘রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা’

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উত্তরপূর্ব উপকূলে একটি নৌকা থেকে ২০ যাত্রীর অবতরণের কথা জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2018, 09:15 AM
Updated : 4 Dec 2018, 09:15 AM

মঙ্গলবার সুমাত্রায় আসা এসব লোকজনের সবাই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা বলে ধারণা ইন্দোনেশীয় কর্মকর্তাদের।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের আশ্রয় শিবির থেকে পালিয়ে নৌকায় মালয়েশিয়ার যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

সুমাত্রায় নোঙ্গর করা ওই নৌকাটিও রোহিঙ্গাদেরই বহন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে হালকা ও ছোট নৌকায় চেপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপ যাওয়ার ঢল দেখা গিয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে সমুদ্রপথে মানব চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর ওই প্রবণতা কমে এসেছিল।

রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা নৌপথের বিপজ্জনক যাত্রাজনিত উদ্বেগ ফের বাড়িয়ে দিচ্ছে।

মঙ্গলবার পূর্ব আচেহ প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা উপকূলে নামা যাত্রীদের রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে অবিহিত করেছে। কুয়ালা ইদি শহরে নামা ওই রোহিঙ্গাদের খাবার ও পানি দেওয়া হয়েছে বলেও সংস্থাটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ইন্দোনেশিয়ার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নৌকার যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছেন।

২০ জনের ওই দলটি মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জেলে সম্প্রদায়ের নেতা রাজালি। কী কারণে ওই নৌকাটি ইন্দোনেশিয়ায় এসেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

“তাদের নৌকাটি এখনো সচল, সেখানে জ্বালানিও আছে। কেন তারা আমাদের এলাকায় এসেছে তা বুঝতে পারছি না,” বলেন কুয়ালা ইদির এ বাসিন্দা।

যাত্রীদের বেশিরভাগেরই বয়স ২০-এর ঘরে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, নৌকাটি বাংলাদেশ না মিয়ানমার থেকে রওনা হয়েছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ২০১৫ সালে চোরাচালানবিরোধী বিস্তৃত অভিযানের সময় আন্দামান সাগরে আটকে পড়া হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় গিয়েছিল।

গত মাসে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালানো ৯৩ জনসহ একটি নৌকা জব্দ করার কথা জানিয়েছিল। ওই নৌকাটিও মালয়েশিয়াগামী নৌকাগুলোর একটি ছিল বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে। ২০১২ সালে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া ব্যাপক সহিংসতার পর লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে তারা রাখাইনের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরের আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ   মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।

গতবছর রাখাইনের উত্তরে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন ও অভিযানের মুখে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।

নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার রাজি থাকলেও কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব ও চলাচলের স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা ছাড়া দেশটিতে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।