ইয়েমেন: তিন বছরে ‘অপুষ্টিতে’ ৮৫ হাজার শিশুর মৃত্যু

তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনের পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮৫ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে বলে জানিয়েছে একটি নেতৃস্থানীয় ত্রাণ সংস্থা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2018, 06:18 AM
Updated : 21 Nov 2018, 07:45 AM

মৃত শিশুদের এই সংখ্যাটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বার্মিংহামের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যার সমান বলে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন, খবর বিবিসির।

এক কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ইয়েমেনি দুর্ভিক্ষের মুখে আছে বলে গত মাসে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এই বিশ্ব সংস্থাটি বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টিকারী ইয়েমেনের যুদ্ধ অবসানে লড়াইরত পক্ষগুলোরকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সানার একটি হাসপাতালে তীব্র অপুষ্টির শিকার চিকিৎসাধীন শিশু। ছবি: রয়টার্স

এ লড়াইয়ে ইয়েমেন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশটির হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদিকে বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার পর দেশটিতে বিমান হামলা শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী, এতে লড়াই আরও ছড়িয়ে পড়ে। 

জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, এ যুদ্ধে অন্তত ৬,৮০০ বেসামরিকের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০,৭০০ জন আহত হয়েছেন।

এ যুদ্ধ ও সৌদি জোটের আংশিক অবরোধ দেশটির দুই কোটি ২০ লাখ লোককে মানবিক ত্রাণ সহায়তার ওপর বেঁচে থাকার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জরুরি খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে এবং কলেরার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে এক কোটি ২০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দুর্যোগময় এসব পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে কতোজনের মৃত্যু হয়েছে সেই সংখ্যা নির্ধারণ করার অত্যন্ত কঠিন।  

সানার একটি হাসপাতালে তীব্র অপুষ্টির শিকার চিকিৎসাধীন শিশু। ছবি: রয়টার্স

ইয়েমেনে কাজ করা ত্রাণ কর্মীরা জানিয়েছেন, দেশটির হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে মাত্র অর্ধেকের মতো এখনও সচল আছে আর অনেক লোকই এত গরিব যে যেগুলো খোলা আছে সেগুলোতে চিকিৎসা নেওয়ার মতোও সঙ্গতি নেই তাদের।

জাতিসংঘের সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, তাদের হিসাবে এপ্রিল ২০১৫ থেকে অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৮৪,৭০০ শিশুর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। 

বাড়তে থাকা খাদ্যমূল্য ও গৃহযুদ্ধের কারণে মান হারাতে হতে থাকা ইয়েমেনি মুদ্রা আরও অনেক পরিবারকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আরও বেশি পরিমাণ লোককে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য সৌদি জোটের অবরোধকে দায়ী করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ত্রাণ সংগঠনটি।