ইরানে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ধকল, চাকরি হারাচ্ছে মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ধকল যাচ্ছে ইরানে। দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এরই মধ্যে।

>>রয়টার্স
Published : 19 Nov 2018, 02:48 PM
Updated : 19 Nov 2018, 04:59 PM

গত ১৬ বছর ধরে ঠাণ্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘তামনুশ’ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে বেকার হয়ে পড়েছে ৪৫ জন কর্মী।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে কাঁচামাল আমদানি খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় ‘তামনুশ’ এর মালিক ফারজাদ রাশিদি নিজের ছোট্ট কোম্পানিটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন বলে জানান।

তিনি বলেন, “বেকার হয়ে পড়া পুরুষ কর্মীরা এখন ট্যাক্সি চালাচ্ছে, নারীরা বাড়িতে কর্মহীন হয়ে আছেন।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিনিধিরা ইরান জুড়ে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিহিংসামূলক বাণিজ্য নীতির কারণে দেশটির শতাধিক ক্ষুদ্র কোম্পনি বন্ধ হয়ে হাজার হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়েছে।

এ বছর মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয়বিশ্বশক্তির করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে তেহরানের ওপর সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

ইরানের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি তেল রপ্তানি একেবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ট্রাম্প প্রশাসন নানা ব্যবস্থা নিচ্ছে। এমনকি ইরানের কাছ থেকে কোনো দেশ তেল কিনলে তাদের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

অক্টোবর থেকে ইরানের মূদ্রার বিনিময়ে মার্কিন ডলার ক্রয়, স্বর্ণ ব্যবসা ও ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী শিল্পের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। যার প্রভাবে ইরানের মূদ্রা ‘ইরানিয়ান রিয়াল’ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পতন দেখেছে। সেই সঙ্গে দেশটির অর্থনীতির চাকার গতি নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।

নভেম্বর থেকেই ইরানের তেল রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

‘তামনুশ’ কোম্পানির মালিক ফারজাদ রাশিদি বলেন, “গত কয়েক মাসে আমরা প্রায় পাঁচশ কোটি রিয়াল (এক লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার) হারিয়েছি। যে কারণে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা মিলে মূদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা না ফেরা পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থেকে কোম্পানির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া বোকামি হবে।”

বেকারত্বের হার বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য উচ্চ বরাদ্দের কারণে দেশটিতে এ বছর এরই মধ্যে কয়েক দফা আন্দোলন হয়েছে।

অগাস্টে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ইরানের অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। যার জেরে শ্রমমন্ত্রী আলি রাবিইকে বরখাস্ত করে ইরানের পার্লামেন্ট।

তখন তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে বছর শেষে প্রায় ২০ লাখ মানুষ চাকরি হারাবে।