ব্রাজিলের হলুদ জার্সির রূপকারের মৃত্যু

ব্রাজিল ফুটবল দলের বিখ্যাত হলুদ রঙের জার্সির নকশাকার আলদির গার্সিয়া শিলি মারা গেছেন।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2018, 10:25 AM
Updated : 17 Nov 2018, 10:27 AM

বিবিসি জানায়, ৮৩ বছরের শিলির ‘স্কিন ক্যান্সার’ এ ভুগছিলেন।

একাধারে নকশাকার, সাংবাদিক ও লেখক শিলি মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বখ্যাত এই জার্সির নকশা করেছিলেন।

১৯৫০ সাল, ব্রাজিলের ঘরের মাঠ ‘মারাকানায়’ দুই লাখ মানুষ সাক্ষী হতে চেয়েছিলেন বিশ্বকাপ ফুটবল জয়ের। উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে অন্তত ড্র করতে পারলেও বিশ্বকাপ যেত ব্রাজিলের ঘরে। কিন্তু আলসিদেস ঘিঘিয়ার গোলে ব্রাজিলিয়ানদের স্বপ্ন চূর্ণ হয়।

উরুগুয়ের বিপক্ষে ওই ম্যাচ হারার আগ পর্যন্ত ব্রাজিল সাধারণত সাদা রঙের জার্সি পরেই মাঠে বেশি নামতো।  

ব্রাজিলের জনগণ সেই হারের স্মৃতি, সেই দল, এমনকি সেই সাদা জার্সি, নীল শর্টস আর সাদা মোজা; সব ভুলে যেতে চাইলো।

সেই সাদা জার্সিতে ছিল না দেশের কোনো ছাপ। পতাকার সবুজ রঙে যে বিশাল বনভূমি, সোনালি হলুদে যে খনিজ সম্পদের চিহ্ন, নীল পৃথিবী ও সাদা তারায় যে সুবিশাল আকাশকে বোঝানো হয়—কিছুই ছিল না ব্রাজিলের সেই সাদা জার্সিতে।

তার উপর হাতের একেবারে কাছ দিয়ে বেরিয়া যাওয়া বিশ্বকাপের দুঃখ ভুলতে এবার বলির পাঁঠা হলো সেই সাদা জার্সি।

১৯৫৩ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নকশাকারদের কাছে ব্রাজিল ফুটবল দলের জার্সির ডিজাইন চাওয়া হলো। শুধু বলে দেওয়া হলো, নানা রঙের হলে চলবে না। বরং দেশের পতাকায় থাকা চার রঙ সবুজ, হলুদ, নীল ও সাদার মধ্যে নকশা করতে হবে। সেরা নকশাকারের জার্সি পরেই ১৯৫৪র বিশ্বকাপে মাঠে নামবে ব্রাজিল।

শিলে তখন উরুগুয়ে সীমান্তবর্তী প্রদেশ রিও গ্রান্ডে ডো সুলের একটি প্রাদেশিক পত্রিকার অঙ্কনশিল্পী। চারশতাধিক নকশার মধ্যে বিজয়ী হলো ১৮ বছরের শিলের নকশা করা জার্সি।

পরে এক সাক্ষাৎকারে শিলে বলেছিলেন, “আলাদা রঙের সমন্বয়ে আমি প্রায় ১০০টি নকশা আঁকি। শেষ পর্যন্ত আমি বুঝতে পারি জার্সির রঙ হলুদ হওয়া উচিত।

“এটা নীল রঙের শর্টসের সঙ্গে চমৎকার দেখাবে, মোজা সাদা এবং সব রঙের চারপাশে সবুজ।”

১৯৫৪ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে প্রথম হলুদ জার্সি পরে খেলতে নামে ব্রাজিল। যদিও ওই ম্যাচে হেরে গিয়েছিল তারা।

চারবছর পর সুইডেনে প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল।

১৬ নভেম্বর শিলের মৃত্যু দিনে উরুগুয়েকে ১ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।