শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে ফের হট্টগোল

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মত হট্টগোল হয়েছে। মাহিন্দা রাজাপাকসের সমর্থকরা দ্বিতীয় একটি অনাস্থা প্রস্তাব বানচাল করার চেষ্টায় স্পিকারের দিকে বই, মরিচের গুঁড়ো এবং পানির বোতল ছুড়ে মারলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

>>রয়টার্স
Published : 16 Nov 2018, 05:08 PM
Updated : 16 Nov 2018, 05:26 PM

এর আগে বুধবার প্রেসিডেন্টের নিয়োগ করা নতুন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব পাস হওয়ার পর পার্লামেন্টে হট্টগোল হয়েছিল। অপসারিত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহ এবং রাজাপাকসের সমর্থকদের মধ্যে বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে রীতিমতো মারপিট হয়।

শুক্রবার রাজাপাকসের সমর্থক এমপি’রা স্পিকারের আসন অবরোধ করে রাখেন। বিক্রমসিংহের সমর্থক দুই আইনপ্রণেতা বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ছুরি নিয়ে ঢুকেছিলেন অভিযোগ করে তারা ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করারও দাবি জানান।

রাজাপাকসের দলের এক এমপি স্পিকার কারু জয়সুরিয়ার অবরুদ্ধ চেয়ারটিতে বসে পড়লে অধিবেশন শুরু করতে বিলম্ব হয়। পুলিশ তখন জয়সুরিয়ার জন্য আরেকটি চেয়ার নিয়ে এলে সেটিতেও তাকে বসতে বাধা দেন রাজাপাকসের সমর্থকরা।

এ পরিস্থিতিতে সরাসরি ভোট সম্ভব না হওয়ায় জয়সুরিয়া কণ্ঠভোট নিতে এমপি’দের নাম ডাকা শুরু করলে রাজাপাকসের সমর্থকরা তার দিকে বইপত্র, মরিচের গুঁড়ো ছুড়ে মারেন।

বুধবার সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্য রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানোয় শ্রীলঙ্কায় কোনো প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রিপরিষদ নেই বলে ঘোষণা করেন স্পিকার কারু জয়সুরিয়া।

গত মাসের শেষ দিকে রনিল বিক্রমসিংহকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করে ওই পদে মাহিন্দা রাজাপাকসেকে বসিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। তার এ পদক্ষেপ পর্যাপ্ত সমর্থন পাবে না বুঝতে পেরে পরে এক ডিক্রিতে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

ডিক্রির বিষয়ে বিরোধীরা আদালতে গেলে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টের ওই আদেশ স্থগিত করে। এরপর বুধবার পার্লামেন্ট অধিবেশন বসে। সেখানে ২২৫ সদস্যের মধ্যে ১২২জনই রাজাপাকসে ও তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সমর্থন জানান। কিন্তু এ ফল মেনে নেননি সিরিসেনা।

ওদিকে, বিক্রমসিংহ বরাবরই পার্লামেন্টে নিজ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার দাবি করে আসছেন। তারা সরকার গড়তে পারেন এবং সে অনুযায়ী কাজও চালাতে পারেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিক্রমসিংহ।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এখন উভয় সংকটে। তাকে হয় বরখাস্ত করা বিক্রমসিংহকে আবার স্বপদে বহাল করতে হবে নতুবা চলমান রাজনৈতিক সংকটে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ‍মুখে পড়তে হবে।