রাশিয়া বা চীনের সঙ্গে ‘যুদ্ধে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র’

যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় নিরাপত্তা ও সামরিক একটি সঙ্কটের মোকাবিলা করছে এবং যুদ্ধে রাশিয়া অথবা চীনের কাছে হেরে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির কংগ্রেসের একটি প্যানেল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2018, 07:51 AM
Updated : 15 Nov 2018, 07:52 AM

বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের দ্বিদলীয় ওই প্যানেলের এক প্রতিবেদনে এসব পর্যবেক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ন্যাশনাল ডিফেন্স ষ্ট্র্যাটেজি কমিশন নামের ওই প্যানেলকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুদূরপ্রসারী ন্যাশনাল ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজি (এনডিএস) পর্যালোচনার দায়িত্ব দিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেস। ট্রাম্পের ওই প্রতিরক্ষা কৌশল পরিকল্পনায় মস্কো ও বেইজিংয়ের মতো নতুন যুগের ‘বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতার’ ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দলীয় ১২ জন শীর্ষ সাবেক নেতা ওই প্যানেলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, ‍যখন মার্কিন সামরিক বাহিনী বাজেট হ্রাস ও সামরিক সুবিধাদি কমে যাওয়ার পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে তখন চীন ও রাশিয়ার মতো কর্তৃত্বপরায়ণ দেশগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিগুলো নিষ্ক্রিয়’ করার লক্ষ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।  

কমিশন বলেছে, “আমেরিকার সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব তার বিশ্বব্যাপী প্রভাব ও জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষমতার মেরুদণ্ড হলেও এটি বিপজ্জনক মাত্রায় ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে।” 

চলতি শতাব্দিতে যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহ-বিরোধী অভিযানে জোর দেওয়ার কারণে লড়াইয়ের অন্যান্য এলাকা যেমন ক্ষেপণাস্ত্র প্র্রতিরক্ষা, সাইবার ও মহাকাশ অভিযান, নৌযুদ্ধ ও সাবমেরিন প্রতিরোধী যুদ্ধের মতো ক্ষেত্রেগুলো থেকে পিছিয়ে পড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “সক্ষম প্রতিপক্ষগুলো বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা ও পরিকল্পনার করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা দুর্বল হয়েছে।” 

প্রতিবেদনে এর জন্য ‘প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ক্রুটিপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্তকে’ দায়ী করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১১ সালে গৃহীত বিশেষ বাজেট নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপগুলো অন্যতম বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এইসব প্রবণতার সবগুলো মিলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সঙ্কট তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।  

কমিশন আরও বলেছে, এশিয়া ও ইউরোপজুড়ে আমেরিকার প্রভাব ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে এবং সামরিক ভারসাম্য ‘নিশ্চিতভাবে প্রতিকূলে’ চলে যাচ্ছে আর তাতে সংঘাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কমিশন তাদের পর্যালোচনায় দেখতে পেয়েছে, “পরবর্তী লড়াইয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী প্রত্যাশিতভাবে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে, লড়াইয়ে জিততে তাদের সংগ্রাম করতে হতে পারে এমনকি চীন বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হেরেও যেতে পারে।”  

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী একইসঙ্গে দুটি বা তারও বেশি যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করতে বাধ্য হলে ‘বিহ্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে’ বলেও ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চলতি বছরের সামরিক বাজেট ৭০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এটি রাশিয়া ও চীনের সম্মিলিত সামরিক বাজেটের চেয়েও অনেক বেশি।

কিন্তু কমিশন বলছে এই বাজেট এনডিএসে যে লক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণে ‘পরিষ্কারভাবে অপর্যাপ্ত’। প্রতিবেদনে তারা মার্কিন প্রতিরক্ষা বাজেট প্রতি বছর তিন থেকে পাঁচ শতাংশ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে।