তার পরিবারের আইনজীবীর বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়,সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস সিনাই মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ট্যান লির মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ বছর।
লির স্ত্রী জোয়ানও গতবছর ঠিক ৯৫ বছর বয়সে মারা যান। মেয়ে জেসি লিকে রেখে গেছেন তারা।
রয়টার্সকে জেসি লি বলেন, তার বাবা ভক্তদের প্রত্যাশার কথা ভেবেই একের পর এক নতুন চরিত্র সৃষ্টি করে গেছেন।
স্ট্যান লিকে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ধরনের অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছিল। কিছুদিন আগে তিনি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কৈশোরেই স্ট্যান লি কাজ শুরু করেন টাইমলি পাবলিকেশনসের কমিক বিভাগে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি কমিক এডিটর হয়ে যান। ওই কোম্পানিই পরে মার্ভেল কমিকসে পরিণত হয়।
শুরুর দিকে বছরগুলোতে মলিকের ইচ্ছায় লিকে ক্রাইম, হরর আর ওয়েস্টার্ন গল্পের কমিক লেখায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। কিশোর তরুণদের মধ্যে ওই ধরনের কমিকই তখন জনপ্রিয় ছিল।
এক ধরনের হতাশা থেকেই ৪০ বছর বয়সে এসে কমিক লেখা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্ট্যান লি। কিন্তু তার স্ত্রী জোয়ান তখন বুদ্ধি দেন, লির উচিৎ নিজের মনের মত একটি চরিত্র সৃষ্টির জন্য কাজ করা। মালিকের পছন্দ না হলে বড় জোর তার চাকরিটা যাবে, সেটাতো তিনি এমনিতেই ছেড়ে দিতে চাইছেন।
এরপর ১৯৬১ সালে কমিক শিল্পী জ্যাক কারবিকে নিয়ে লি সৃষ্টি করলেন ফ্যান্টাস্টিক ফোর। টাইমলি পাবলিকেশনস নাম বদলে হয় মার্ভেল কমিকস। সেই সঙ্গে কমিক বইয়ের স্বর্ণযুগের সূচনা হয়।
বিবিসি লিখেছে, কমিক শিল্পীদের প্রাপ্য স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রেও লি একজন অগ্রপথিক। কারবি, ফ্রাঙ্ক মিলার, জন রমিতার মত শিল্পীরা তার সঙ্গে কাজ করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
সেই সব দিনে বছরে পাঁচ কোটি কমিক বইও বিক্রি করেছে মার্ভেল। ১৯৭১ সালে অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মার্ভেলের প্রতিটি বই নিজে লিখেছেন লি। অবসরে যাওয়ার পরও তিনি ছিলেন কোম্পানির চেয়ারম্যান এমিরিটাস।
দুনিয়া কাঁপানো অনেক সুপারহিরোর এই স্রষ্টা সব সময় বিশ্বাস করতেন ভাগ্যে। তার ভাষায়, সৌভাগ্যের চেয়ে বড় ‘সুপার পাওয়ার’ আর কী হতে পারে!