ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটেই খাশুগজি খুন হয়েছেন, প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের এমন স্বীকারোক্তির পর এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তুরস্ক, খবর বিবিসির।
“তুরস্ক কখনোই ধামাচাপা দেওয়া অনুমোদন করবে না। যা হয়েছে তার সবকিছু প্রকাশ করবে তুরস্ক,” বার্তা সংস্থা আনাদৌলুকে বলেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন একেপি দলের মুখপাত্র ওমের জেলিক।
“এ বিষয়ে কখনোই কারো সন্দেহ করা উচিত না। আগেই আমরা কাউকে অভিযুক্ত করছি না, কিন্তু আমরা কখনোই কোনো কিছু ধামাচাপা দেওয়া মেনে নিবো না,” বলেছেন তিনি।
শুক্রবার সৌদি আরব স্বীকার করে প্রখ্যাত সৌদি সমালোচক খাশুগজি ‘মুষ্টি যুদ্ধে’ মারা গেছেন। তারা বলেছে, কনসুলেট ভবনের ভিতরে খাশুগজির সঙ্গে যারা সাক্ষাৎ করেছিলেন তাদের সঙ্গে তার মারামারি শুরু হয় আর তা শেষ হয় খাশুগজির মৃত্যুর মাধ্যমে।
এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং এ পর্যন্ত ১৮ সৌদি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলা অনামা সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাশুগজির মৃতদেহের ব্যবস্থা করার জন্য ‘স্থানীয় এক সহযোগীর’ কাছে তা হস্তান্তর করা হয় এবং এরপর থেকে মৃতদেহটি কোথায় তা সৌদি আরব জানে না।
সৌদি আরবের এসব স্বীকারোক্তির পর থেকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রকাশ্যে দেশটিকে দোষারোপ করা বন্ধ রেখেছে তুরস্ক।
এর আগে তুরস্কের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ওই কনসুলেট ভবনের ভিতরে খাশুগজিকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে তার দেহ টুকরা টুকরা করে ফেলা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রমাণ করার মতো অডিও ও ভিজ্যুয়াল সাক্ষ্য তাদের কাছে আছে বলে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন অনামা তুর্কি কর্মকর্তারা।
তুরস্কের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাদের হাতে থাকা অডিও ও ভিডিও থেকে বোঝা গেছে কনসুলেট ভবনের ভিতরে সৌদি গোয়েন্দাদের একটি দল খাশুগজিকে খুন করে টুকরা টুকরা করে ফেলেছে।
গত সপ্তাহে তুরস্কের গণমাধ্যম বিস্তারিত ভয়ঙ্কর বর্ণনা তুলে ধরে সেগুলো খাশুগির জীবনের শেষ কয়েকটি মূহুর্তের বলে উল্লেখ করেছে।
খাশুগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তুরস্কের পুলিশ ও কৌঁসুলিরা ওই কনসুলেট ভবন ও কনসালের বাসভবনে তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার তারা নিকটবর্তী একটি বনেও তল্লাশি চালিয়েছে। এই বনে খাশুগজির মৃতদেহ থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
খাশুগজি নিজের আসন্ন বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু আর বের হয়ে আসেননি। খাশুগজির অন্তর্ধানের ব্যাখ্যা কী, এই নিয়ে কঠিন চাপে পড়েছিল সৌদি আরব। শুক্রবারের আগ পর্যন্ত খাশুগজি খোঁজ তাদের জানা নেই এবং সে কনসুলেট ভবন ছেড়ে গেছে বলে দাবি করে আসছিল দেশটি।