ক্রিমিয়ার কলেজে হামলায় নিহত ১৯

রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্রিমিয়ায় একটি কলেজে হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং আরো অন্ততপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2018, 12:43 PM
Updated : 17 Oct 2018, 05:47 PM

রাশিয়া যেখানে ক্রিমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণ করছে, সেই কের্চ এলাকার টেকনিক্যাল কলেজে বুধবার এ হামলা হয়।

রাশিয়ার আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তারা বলছেন, এক ছাত্র কলেজ ভবনে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। পরে সে আত্মহত্যা করে।

১৮ বছর বয়সী ওই ছাত্রের নাম ভ্লাদিস্লাভ রোসলিয়াকভ। তার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সে প্রথমে ক্যান্টিনের কাছে বোমা ফাটানোর পর দৌড়ে গুলি চালাতে চালাতে কলেজের এক কক্ষ থেকে অরেক কক্ষে যায়। পরে সে নিজেকে গুলি করে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তার হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ছাত্রটির দেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে কলেজ লাইব্রেরিতে। ঘটনাটিকে প্রথমে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলা হলেও রাশিয়ার তদন্ত কমিটি পরে এ ঘটনাকে ‘নির্বিচার হত্যাকাণ্ড’ বলেছে।

কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং স্টাফরা জানিয়েছে, হামলাটি একটি বোমা বিস্ফোরণ দিয়ে শুরু হওয়ার পর আরো কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে এবং গুলি চলেছে।

রাশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড ইউনিটের সদস্যদেরকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামলার শিকার হওয়া বেশিরভাগই কলেজের শিক্ষার্থী। আহতদেরকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই শার্পনেল এবং গুলিতে আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে।

কলেজের পরিচালক ওগলা গ্রেবেনিকোভা ক্রিমিয়ার গণমাধ্যমে বলেন, তিনি কলেজ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার ৫/১০ মিনিট পরই বিস্ফোরণে সব কিছু উড়ে যায়। চতুর্দিকে মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রকৃতই সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হয়েছে।

এর আগে প্রাথমিক খবরে তিনি কিছু সশস্ত্র লোক এ হামলা চালায় বলে জানিয়েছিলেন এবং ঘটনাটিকে ২০০৪ সালের বেসলান স্কুল অবরোধের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। ওই ঘটনায় প্রায় ৩৩০ জন নিহত হয়েছিল।

রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে নিজেদের অংশ করে নেওয়ার পর তুমুল আন্তর্জাতিক সমালোচনার শিকার হয়েছে। তবে এর পর থেকে ক্রিমিয়ায় এমন বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।

রাশিয়ার সোচিতে মিশরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে থাকা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রিমিয়ার কলেজে হামলার খবরে নিহতদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এটি পরিষ্কারভাবেই একটি অপরাধ। হামলার উদ্দেশ্য কি তা খতিয়ে দেখা হবে।”

ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেইনের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে। পুর্ব ইউক্রেইনে এখনো চলছে রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে কিয়েভের লড়াই।

রাশিয়া-সমর্থিত ক্রিমিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার ভ্লাদিমির কোনস্তানটিনভ বলেছেন, কিয়েভ এ হামলার পেছনে জড়িত থাকতে পারে। তিনি বলেন, “ক্রিমিয়ায় অশুভ যা কিছুই ঘটবে তার সবই ঘটাবে ইউক্রেইন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।”