নওয়াজ শরিফের আপিলের শুনানি করে ইসলামাবাদ হাই কোর্ট বুধবার এ আদেশ দেয় বলে ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
লন্ডনে চারটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ৬ জুলাই পাকিস্তানের একটি আদালত নওয়াজকে ১০ বছর ও তার মেয়ে মরিয়মকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়।
এর এক সপ্তাহের মাথায় নওয়াজ ও তার মেয়ে লন্ডন থেকে ফিরলে ১৩ জুলাই বিমানবন্দর থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো।
নওয়াজ বন্দি থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর নওয়াজকে প্যারলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
প্যারলের সময় শেষ হওয়ার পর তারা আবার কারাগারে ফিরে যান।
অ্যাকাউন্টেবিলিটি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে নওয়াজের আইনজীবীদের করা আপিলের মধ্যেই আদালত তাদেরকে মুক্তি দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত জানাল।
বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ ও বিচারপতি মিয়াঁগুল হাসান আওরঙ্গজেব বেঞ্চ বুধবার তাদের আপিল আবেদন গ্রহণ করেন এবং আপিল শুনানির পর চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত তাদের দণ্ড স্থগিতের নির্দেশ দেন।
তবে আপিলের শুনানি শুরুর তারিখ এখনও নির্দিষ্ট হয়নি।
আপিল আবেদন গ্রহণ করে দণ্ড স্থগিতের পর নওয়াজ, মরিয়ম ও তার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাফদারের জামিন আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করে এবং তাদের পাঁচ লাখ রুপি জামানত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ বলেন, “সম্পত্তিগুলো যে নওয়াজ শরিফেরই তা প্রমাণ হয়নি এবং মরিয়ম নওয়াজ কিভাবে একই চার্জশীটের আওতায় দণ্ড পেলেন সেটিও প্রমাণ হয়নি।”
তারা খুব শিগগিরই জামিনে মুক্তি পাওয়ার আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আদালতের রায়ের পর পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের কর্মীরা আদালত কক্ষে উল্লাস প্রকাশ করেছে। শরিফের দলের নেতা এ রায়কে ‘ন্যায়ের জয়’ বলে অভিহিত করেছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
ওদিকে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের এক সিনেটর স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বলেছেন, “দণ্ড স্থগিত হয়েছে মাত্র। কিন্তু তারা সবাই সমানভাবে দোষী। আদিয়ালা জেলই তাদের গন্তব্য।”
বিবিসি সংবাদদাতারা বলছেন, নওয়াজ শরিফের মামলাটি নিয়ে পাকিস্তানে মতভেদ আছে।
শরিফের সমর্থকরা মনে করেন, দেশের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার বিরোধের কারণেই মূলত শরিফ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে নতুন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ শরিফের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা মামলায় তার সাজা পাওয়াকে জবাবদিহিতার জয় বলেই মনে করে।