ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের ওধানগা গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ডাকঘর প্রাঙ্গণে একদল শিশু খেলতে খেলতে হঠাৎ করেই কাগজপত্র ভর্তি কয়েকটি বড় বড় বস্তা দেখতে পায়।
তারা বস্তাগুলো খুলে সেগুলোর ভেতর চিঠি, এটিএম কার্ড, চেকবই, এমনকি চাকরির নিয়োগপত্র পর্যন্ত আছে দেখতে পেয়ে তাদের বাবা-মা কে বিষয়টি জানায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে দ্রুত কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে যায়।
‘দ্য হিন্দুস্তান টাইমস’ এর খবর অনুযায়ী, সেখানে ৬ হাজরের মত চিঠি ও প্যাকেট পাওয়া গেছে। কোনো কোনোটি এমনকি ২০০৪ সালের।
সেগুলোর মধ্য থেকে প্রায় দেড় হাজার চিঠি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলো ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে বা উইপোকা খেয়ে ফেলেছে।
অভিযুক্ত ডাকপিয়নের নাম জগন্নাথ পুহান। অ্যাসিসটেন্ট ব্রাঞ্চ পোস্টমাস্টার হিসেবে গত এক দশকের বেশিরভাগ সময় তিনি ওধানগা গ্রামের ওই ডাকঘরের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বিবিসি জানায়, অত্যন্ত কৌশলের সঙ্গে ১০ বছর ধরে জগন্নাথ এভাবে নিজ দায়িত্বে ফাঁকি দিয়ে এসেছেন।
রেজিস্ট্রি চিঠি বা দ্রুত পাঠাতে হবে এমন চিঠি তিনি যথা সময়েই বিলি করতেন। কারণ তিনি জানতেন, এসব ক্ষেত্রে চিঠি যিনি পাঠিয়েছেন তিনি সেটি পৌঁছেছে কিনা তার খোঁজ রাখবেন।
কিন্তু অন্যান্য চিঠি বিলি করার পরিবর্তে তিনি স্টোরে ফেলে রাখতেন। কেন তিনি এভাবে দায়িত্বে অবহেলা করেছেন তা এখনও জানা যায়নি।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত পোস্টমাস্টারের দাবি গত কয়েক বছর ধরে তিনি ‘ঠিকমত হাঁটতে পারেন না এবং তার শরীরের যে অবস্থা তাতে তার পক্ষে চিঠিগুলো বিলি করা সম্ভব ছিল না’।
কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তবে তারাও অনেকটা ধাঁধার মধ্যে আছে। এত বছর ধরে এত চিঠি বিলি করা হয়নি, তারপরও কেন স্থানীয়রা এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয় এক তরুণের নামে ২০১১ সালে ইন্ডিয়ান নেভি থেকে পাঠানো একটি নিয়োগপত্রও সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান এক তদন্ত কর্মকর্তা।