যুক্তরাষ্ট্রে বিচারককে হত্যার হুমকি

মরুভূমির মধ্যে একটি স্থাপনা থেকে আটক আটক পাঁচ ব্যক্তিকে জামিন দেওয়ায় নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের এক বিচারককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2018, 09:00 AM
Updated : 15 August 2018, 09:02 AM

বিচারক সারাহ বাকাস জানিয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা সমাজের জন্য হুমকি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা তা প্রমাণ করতে না পারায় তাদের জামিন দেওয়া হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, নিখোঁজ তিন বছর বয়সী শিশু আব্দুল গনি ওয়াহাজের খোঁজে মরুভূমির প্রত্যন্ত একটি স্থাপনায় অভিযান চালিয়ে দুই পুরুষ ও তিন নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ওই স্থাপনা থেকে ১১টি অভুক্ত শিশু ও কবর দেওয়া একটি বাচ্চার দেহাবশেষ খুঁজে পায় পুলিশ। ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

সোমবার শুনানির পর বিচারক বাকাস ওই পাঁচ জনের জামিন মঞ্জুর করে তাদের সবাইকে অ্যাঙ্কেল মনিটর পরতে হবে এবং প্রতি সপ্তাহে তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে বলে আদেশ দেন।

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে গনি ওয়াহাজের বাবা সিরাজ ওয়াহাজও রয়েছেন।

কিন্তু বিচারক বাকাসের জামিনের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

নিউ মেক্সিকো আদালতের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি বিচারককে কল করে ‘তার গলা যেন কাটা পড়ে এমন কামনা’ করেছেন; আরেকজন বলেছেন, “আশা করছেন কেউ একজন এসে তার (বিচারকের) মাথা গুড়িয়ে দিবে।”

ইমেইলে অপর একজন বাকাসকে ‘ইসলামি সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

এসব হুমকি আসার পর মঙ্গলবার টাওস কাউন্টির আদলত ভবন থেকে কিছুক্ষণের জন্য সবাইকে বের করে দিয়েছিলেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। 

“সেখানে বড় ধরনের কোনো চক্রান্ত চলছিল বলে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগে, যদিও তারা আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। কি চক্রান্ত চলছিল তার স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি,” বলেছেন বিচারক বাকাস।  

‘শিশুদের অস্ত্র চালানো ও স্কুলে হামলার প্রশিক্ষণ দেওয়ার’ অভিযোগ এনে আটক পাঁচজনকে ‘বিপজ্জনক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাদের জামিন নামঞ্জুরের অনুরোধ ছিল রাষ্ট্রপক্ষের।

উদ্ধার হওয়া মৃতদেহটি নিখোঁজ আব্দুল গনির বলেও দাবি করেছিল তারা।

তিন বছর বয়সী আব্দুল গনির মৃত্যুর সময় ‘শয়তানি আত্মাকে পরাজিত করার লক্ষে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে’ সিরাজ তার ছেলের কপালে হাত রেখে কোরআনের আয়াত আওড়াচ্ছিলেন বলেও উদ্ধার হওয়া শিশুদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন কৌঁসুলিরা।

তবে আটককৃতদের আইনজীবীরা বলছেন, শুধু মুসলিম হওয়ার কারণেই এ পাঁচজনের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে।

বিপক্ষের আইনজীবীদের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা।

আটককৃতদের পক্ষের আইনজীবী থমাস ক্লার্ক বলেছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা খ্রিস্টান ও শ্বেতাঙ্গ হলে ‘কেউই ধর্মীয় বিশ্বাসের মাধ্যমে সারিয়ে তোলার বিষয়টিকে বাঁকা চোখে দেখতেন না’।

“কিন্তু যখনই কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমানরা এটি করে, তখনি (তাদের) মনে হয়, কিছু একটা পৈশাচিক, কোনো ধরনের শয়তানি কিছু হচ্ছে,” বলেছেন থমাস।