যুক্তরাষ্ট্রের ইলেট্রোনিক পণ্য বয়কটের ঘোষণা তুরস্কের

যুক্তরাষ্ট্রের ইলেট্রোনিক পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান।

>>রয়টার্স
Published : 14 August 2018, 02:24 PM
Updated : 14 August 2018, 02:24 PM

যাজকের মুক্তি নিয়ে কূটনৈতিক বিরোধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর দ্বিগুণ শুল্কারোপের পর এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এরদোয়ান এ ঘোষণা দিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র গত শুক্রবার তুর্কি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্কারোপের পরপরই বিশ্ববাজারে তুরস্কের মুদ্রা লিরার দাম একদিনে ২০ শতাংশ কমে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শেয়ার বাজারগুলোতেও পড়েছে। সোমবার ডলারের বিপরীতে লিরার দাম সবচেয়ে কম ছিল (১ ডলার= ৭ দশমিক ২৪ লিরা)।

যদিও মঙ্গলবার লিরার দর কিছুটা বেড়েছে। এদিন ০৯:১৮ জিএমটিতে ডলারের বিপরীতে ৬ দশমিক ৫৩ লিরা বিনিময় হয়েছে।

লিরার দরপতনের পর তুরস্কের অর্থমন্ত্রী সম্মেলন করেন এবং বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, দেশের অর্থনীতির উপর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে।

তুরস্ক অর্থনৈতিক যুদ্ধের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে এরদোয়ান তুর্কি নাগরিকদের লিরার দরপতন আটকাতে নিজেদের কাছে থাকা ডলার ও ইউরো বিক্রি করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

“আমাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ডলার, মুদ্রামূল্য, মুদ্রাস্ফ্রীতি ও সুদের হারের বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়াব। আমরা একজোট হয়ে আমাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষা করব।”

যুক্তরাষ্ট্রের ইলেট্রোনিক পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়ে এরদোয়ান আরো বলেন, “যদি তাদের আইফোন থাকে, তবে অন্যদিকে কোরিয়ার তৈরি স্যামসাং আছে। আমাদের নিজেদের ভেসটেলও বিকল্প হতে পারে।” 

এরদোয়ানের এ ঘোষণার পর তুরস্কের ইলেক্ট্রোনিক পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি ভেসটেলের শেয়ার পাঁচ শতাংশ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের মূল বিরোধটা বেধেছে আমেরিকান যাজক এন্ড্রু ব্রানসনকে নিয়ে। দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র তার মুক্তি দাবি করে আসলেও তুরস্ক তাতে রাজি নয়।

তার সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুন্দিস্থান ওয়ার্কাস পার্টি (পিকেকে) এবং ফেতুল্লাহ গুলেন পন্থি সংগঠনের যোগাযোগ আছে বলে অভিযোগ তুরস্কের। ফেতুল্লাহ গুলেনই ২০১৬ সালে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার হোতা বলে দাবি এরদোয়ানের।

এছাড়াও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইরত কুর্দি বিদ্রোহী গ্রুপের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও দু’দেশের মধ্যে বিরোধের আরেকটি কারণ। তুরস্ক কুর্দিদের জঙ্গি সংগঠন বলে বিবেচনা করে এবং দেশটি নিজ ভুখন্ডে কুর্দি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের বড়াতে থাকা ঘনিষ্ঠতাও নেটো জোটের দুই সদস্য দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে। নেটো জোট রাশিয়াকে তাদের এক নম্বর শত্রু বলে বিবেচনা করে।