‘ইহুদি জাতি রাষ্ট্র’ আইনের অনুমোদন ইসরায়েলি পার্লামেন্টের

ইসরায়েলকে কেবলমাত্র ইহুদিদের রাষ্ট্র হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে আনা বিতর্কিত একটি বিল পাস করে সেটিকে আইনে পরিণত করেছে দেশটির পার্লামেন্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2018, 07:52 AM
Updated : 19 July 2018, 08:04 AM

‘ইহুদি জাতি রাষ্ট্র’ শীর্ষক এ বিলটিতে রাষ্ট্রভাষার তালিকায় থাকা আরবির মর্যাদা কমানো এবং জাতীয় স্বার্থে ইহুদিদের বসতিস্থাপনের পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

বিলে ‘সম্পূর্ণ ও একত্রিত’ জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।

ইসরায়েলের আরব সাংসদরা আইনটির বিরোধিতা করলেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিল অনুমোদনের ঘটনার প্রশংসা করে একে ‘বাঁকবদলের মুহুর্ত’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।

নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকার সমর্থিত বিলটিতে ইসরায়েলকে ‘ইহুদিদের ঐতিহাসিক জন্মভূমি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইহুদিরা ইসরায়েলের জাতিগত আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও বিশেষ অধিকার রাখেন।    

আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা ঝড়ো অধিবেশনের পর ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বিলটি ৬২-৫৫ ভোটে অনুমোদিত হয় বলে বিবিসি খবরে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ও অ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তিতে বিলটির প্রাথমিক খসড়া থেকে বেশ কয়েকটি ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে; ধারাগুলোর একটিতে বিভিন্ন আইনে ‘কেবলমাত্র ইহুদি সম্প্রদায় সৃষ্টিতে’ বিধান সন্নিবেশিত করার কথা বলা হয়েছিল।

ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যা ৯০ লাখ। এদের প্রায় ২০ শতাংশ আরব, যাদের অধিকাংশই সুন্নি মুসলমান; বাকিরা খ্রিস্টান ও দ্রুজ। 

দেশটির আইনে আরব ও ইহুদিদের সমান অধিকার দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ করে আসছেন ইসরায়েলি আরবরা।

ভূখণ্ডের ভেতর থাকা আরবদেরকে ইসরায়েল দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে গণ্য করে আসছে বলেও দাবি তাদের। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের মতো পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে আসছেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে ‘ইহুদি জাতি রাষ্ট্র’ আইন দেশটিতে জাতিগত বিভেদের রাজনীতি উসকে দেবে বলে আশঙ্কা দেশটির আরব নেতাদের।

ইসরায়েলে যে ‘গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে’ এটি তারই প্রতিনিধিত্ব করছে, বিল পাসের প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই বলেছেন দেশটির আরব সাংসদ আহমেদ তিবি।

গত সপ্তাহে দেওয়া এক বক্তৃতায় নেতানিয়াহু বেসামরিক নাগরিকদের অধিকার অক্ষুণ্ন রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও ‘সংখ্যাগরিষ্ঠদেরও অধিকার আছে, এবং তারাই সিদ্ধান্ত নিবে’ বলে জানিয়েছিলেন।