আসাদ নিরাপদ থাকবে, কিন্তু ইরানকে সিরিয়া ছাড়তে হবে: ইসরায়েল

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করবে না বলে রাশিয়াকে জানিয়েছে ইসরায়েল, কিন্তু ইরানি বাহিনীগুলোকে সিরিয়া ছাড়তে মস্কোর উৎসাহিত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2018, 04:28 AM
Updated : 12 July 2018, 05:23 AM

বুধবার মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এসব বলেছেন বলে জানিয়েছেন এক ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তা, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা বলেছেন, “আসাদ সরকারকে স্থিতিশীল করতে সক্রিয়া আগ্রহ দেখাচ্ছে তারা (রাশিয়া), আর আমরা চাই ইরানিদের বের করে দিতে।”

“আমরা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো না,” পুতিনকে নেতানিয়াহু এমনটি বলেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু নেতানিয়াহু পুতিনকে এমনটি বলেছেন বলে স্বীকার করেননি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ডেভিড কিস।

সিরিয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি নীতি সংক্ষেপে তুলে ধরার অনুরোধ করা হলে কিস বলেন, “ওই গৃহযুদ্ধে জড়াব না আমরা। তবে আমাদের বিরুদ্ধে যারাই তৎপরতা চালাবে আমরা তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিবো।”

পরিচায় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানিদের গোলান মালভূমি থেকে দূরে রাখতে রাশিয়া কাজ করে যাচ্ছে এবং ইরানিদের গোলান থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের দাবি এর চেয়ে বেশি কিছু; ইসরায়েল চায় সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলোসহ ইরানি বাহিনীগুলো পুরোপুরি সিরিয়া ছেড়ে চলে যাক।

রয়টাসর্ জানিয়েছে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা পুতিন-নেতানিয়াহু বৈঠক নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমি থেকে সীমান্তের ওপাশে সিরিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে দুই ইসরায়েলি সৈন্য; ১১ জুলাই, ২০১৮। রয়টার্স

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ২০১৫ সালে রাশিয়া সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করার পর থেকে ওই যুদ্ধের মোড় আসাদের পক্ষে ঘুরে যায়। কিন্তু রাশিয়া আসাদের পক্ষ হয়ে লড়াই করা ইরানি বাহিনীগুলো ও ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের অবস্থান ও অস্ত্রের চালানের ওপর ইসরায়েলি হামলাগুলোর বিষয়ে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করে আসছে।

রাশিয়া ও ইরানের সক্রিয় সমর্থনে প্রেসিডেন্ট আসাদ সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করে সেসব স্থানে অবস্থান দৃঢ় করে তুলেছেন। সম্প্রতি আসাদের বাহিনীগুলো ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্থানরত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এতে উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে ইসরায়েলি বাহিনী।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছিল ইসরায়েল। পরে গোলান মালভূমিকে নিজেদের সীমানাভুক্ত করে নিয়েছে, যদিও ইসরায়েলের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। 

আসাদ তার ইরানি ও হিজবুল্লাহ মিত্র বাহিনীকে গোলানে ইসরায়েলি লাইন বরাবর মোতায়েন করতে পারে কিংবা সিরীয় বাহিনী ১৯৭৪ সালে ঘোষিত গোলানের অসামরিকরণ অগ্রাহ্য করতে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন ইসরায়েল।                

পুতিন-নেতানিয়াহু বৈঠকের কয়েক ঘন্টা আগে ইসরায়েল জানিয়েছিল, তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী একটি সিরীয় ড্রোনকে গুলি করে নামিয়েছে তারা।

এতে গোলান সীমান্তে বিদ্যমান উত্তেজনা এবং সিরিয়া ও ইসরায়েলের পারস্পারিক অবিশ্বাস প্রতিফলিত হয়েছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।