মাদক ঠেকাতে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনছে শ্রীলঙ্কা

মাদকের বিস্তার ঠেকাতে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রাখা মাদক অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2018, 06:05 AM
Updated : 11 July 2018, 06:05 AM

মঙ্গলবার দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী যামিনী জয়বিক্রম পেরেরা সাংবাদিকদের বলেন, মাদকের কারণে গুরুতর অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার চাপ ছিল প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার ওপরে।

“মন্ত্রিসভার সদস্যরা সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। কারাগারে বসে অপরাধের বিস্তার ঘটিয়ে আসামিরা দেশের সর্বনাশ করবে- এটা আমরা হতে দিতে পারি না।” 

বৌদ্ধ প্রধান দেশ শ্রীলঙ্কার আইনে হত্যা, ধর্ষণ, আর মাদক চোরাচালানের মত গুরুতর অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও ১৯৭৬ সালের পর দেশটির কোনো সরকারই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি।   

শ্রীলঙ্কার আদালত অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়ে এলেও সরকার তা কার্যকর ন করায় সেই আসামিদের কার্যত যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করতে হচ্ছে।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মাদক চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় এবং এর জের ধরে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটায় সরকারকে চাপের মধ্যে পড়তে হয়।

এর মধ্যে খবর আসে, মাদক আইনে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কয়েকজন আসামি কারাগারে বসেই শ্রীলঙ্কায় মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। এরপর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে। 

ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা স্থগিত থাকা মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকরের জন্য বিচার ও কারা সংস্কার বিষয়ক মন্ত্রীকে একটি খসড়া বিল তৈরির দায়িত্ব দেন।  

এই সিদ্ধান্তের ফলে গত ১৫ বছরে মাদক আইনের মামলায় আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় পাওয়া আসামিদের সবার সাজা কার্যকর করা হতে পারে বলে জানান জয়বিক্রম পেরেরা।

শ্রীলঙ্কা হাই কোর্টের একজন বিচারক খুন হওয়ার পর ২০০৪ সালেও দেশটির সরকার গুরুতর অপরাধে মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সরকারের ওই সিদ্ধান্ত সে সময় বিরোধিতার মুখে পড়ে। ফলে কোনো মৃত্যুদণ্ড আর কার্যকর হয়নি।