পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ১০ বছর জেল

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির দুর্নীতি-বিরোধী আদালত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2018, 11:56 AM
Updated : 6 July 2018, 02:08 PM

৭ বছরের জেল হয়েছে তার মেয়ে মরিয়ম নেওয়াজেরও। জিও টিভিসহ আরো কয়েকটি টিভি চ্যানেল এ খবর  দিয়েছে।

লন্ডনে চারটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে আদালত শুক্রবার নওয়াজকে এ সাজা দেয়। একইসঙ্গে তাকে ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।

নওয়াজের মেয়েকেও জরিমানা করা হয়েছে ২০ লাখ পাউন্ড। সেইসঙ্গে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে নওয়াজ পরিবারের লন্ডনের সম্পত্তিও জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন নওয়াজ ও তার মেয়ে মরিয়ম। তাদের অনুপস্থিতিতেই আদালত রায় ঘোষণা করেছে।

নওয়াজ ও মরিয়ম দুইজনই কোনো অপকর্মের কথা অস্বীকার করেছেন এবং তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। নওয়াজ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

নওয়াজের মেয়ের সঙ্গে সঙ্গে জামাতা সফদর আওয়ানকেও আদালত এক বছরের জেল দিয়েছে। কয়েকদফা বিলম্বের পর ন্যাশনাল একাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) আদালত এ রায় দিল।

রায়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, “নওয়াজ শরিফ পরিবারের লন্ডনের ওই সম্পত্তিগুলো দুর্নীতির মাধ্যমেই অর্জিত।”

আয়ের চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক হওয়ার কারণে শরিফকে ১০ বছর জেল দেওয়ার পাশাপাশি এনএবি তদন্তে সহযোগিতা না করার জন্য একই সময়ে এক বছরের সাজা ভোগ করার ঘোষণা দেন বিচারক মোহাম্মদ বশির।

নওয়াজের মেয়ে মরিয়মকেও অপরাধে সায় দেওয়ার জন্য ৭ বছর এবং অসহযোগিতার জন্য একই সময়ে ১ বছরের জেল খাটার সাজা দেওয়া হয়েছে। আর সফদর  আওয়ান ১ বছরের সাজা পেয়েছেন এনএবি কে সহযোগিতা না করার জন্য। আইনজীবী সর্দার মুজাফফর আব্বাসি একথা জানিয়েছেন।

২০১৫ সালে পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে।পানামা পেপার্স সূত্রেই প্রকাশ পায়, নওয়াজ শরিফের সন্তানদের এমন কিছু অফশোর কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল যাদের লন্ডনে স্থাবর সম্পত্তি আছে। এর মধ্যে ছিল লন্ডনের চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। তবে তার পরিবারের দাবি আইন মেনেই তারা এসব ফ্ল্যাট কিনেছেন।

পাকিস্তানে ২৫ জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনের আগে দিয়ে শরিফের দুর্নীতি মামলার  রায় তার রাজনৈতিক দলের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে গত বছর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর পদত্যাগ করেছিলেন নওয়াজ। আর এবছর এপ্রিলে তাকে রাষ্ট্রীয় পদে আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।

নওয়াজের পদত্যাগের পর তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর নেতৃত্বে আসেন নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফ। জুলাইয়ের নির্বাচনে দাঁড়াবেন তিনি।

নওয়াজ শরিফ তিনবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের জুলাই পর্যন্ত এবং ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯৯ সালের রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

আর তৃতীয় বার তিনি দ্বায়িত্ব পালন করেন ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত।