জাপানের ওসাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৩

জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ওসাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নয় বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2018, 04:45 AM
Updated : 18 June 2018, 06:01 AM

সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে হওয়া এ ভূমিকম্পে ওসাকার কাছাকাছি শিগা, কিয়েতো, নারা অঞ্চলও কেঁপে ওঠে। 

জাপানের আবহাওয়া দপ্তর ভূমিকম্পটির মাত্রা ৬ দশমিক ১ জানালেও, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা কম্পনের মাত্রা ৬ এর নিচে ছিল বলে জানিয়েছে।

ভূমিকম্পের পর অনুভূত হওয়া বেশ কয়েকটি পরাঘাতও আশপাশের অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ওসাকায় ১৯৯৫ সালের পর হওয়া শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে অসংখ্য বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ট্রেন ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি।  

ভূমিকম্পের সময় তাকাৎসুকির একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৯ বছর বয়সী এক শিশুর ওপর দেয়াল ধসে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

ওসাকায় ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধও দেয়ালচাপা পড়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে জাপানি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে।

আহতের সংখ্যা কয়েক ডজন বলেও জানিয়েছে তারা। অনেকেই নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও শঙ্কা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া বাহিনীগুলোর।

জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা দ্রুতগামী ও সাধারণ সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। ওসাকা এবং আশপাশের এলাকায় থাকা কলকারখানার কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ভূমিকম্পে ওসাকার লাখখানেক বাড়ির গ্যাস এবং প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে খবর এনএইচকের। অনেক এলাকার রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি ও পানির পাইপ ফেটে গেছে। লিফটের ভেতর মানুষ আটকা পড়ারও খবর পাওয়া গেছে। 

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

“ভূমিকম্প পরবর্তী সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। সরকার জনগণের প্রাণের নিরাপত্তাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।”

তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি।

ভূমিকম্পে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের জাপান প্রতিনিধিও সামান্য আহত হয়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে।

“ঘুমন্ত অবস্থাতেই ঘরের বেশ কিছু ভারী জিনিস গায়ের ওপর এসে পড়ে। জাগতেই দেখি পুরো ঘর কেঁপে কেঁপে উঠছে।” 

স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত আর কোনো বাংলাদেশির হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

এর আগে ২০১৬ সালের মার্চে জাপানের কুমামতো শহরে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

ভূমিকম্পে রাস্তাঘাটের পাশাপাশি বেশ কিছু ভবনও ধসে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।