অস্থিরতা থামছেই না নিকারাগুয়ায়

সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে সহিংসতা বন্ধে সমঝোতা হলেও মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ায় অস্থিরতা থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2018, 06:58 AM
Updated : 17 June 2018, 06:58 AM

দুই পক্ষের আলোচনায় সাময়িক অস্ত্রবিরতির ঘোষণা এলেও শনিবার সকালে এক ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জন পুড়ে মারা যাওয়ায় সহিংসতা ফের দানা বাঁধতে পারে বলে শঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।

সরকারপন্থি আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে ওই ছয়জনকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আগুন নেভাতে ছুটে আসা মানুষজনকেও ভয় দেখানো হয়, বলছে তারা।  

পুড়ে যাওয়া ভবনটির নিচতলায় একটি ম্যাট্রেসের দোকান ছিল। নিহতরাই দোকানটির মালিক ছিলেন, তারা ওপরতলায় থাকতেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মাথা ঢাকা একদল মানুষ মলোটোভ ককটেল ছুড়ে ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

সশস্ত্র পুলিশের সহযোগিতায় মুখোশধারী সরকারপন্থি সমর্থকরা শনিবার মানাগুয়াতেও দুজনকে হত্যা করেছে বলেও দাবি বিরোধীদের। 

অভিযোগ অস্বীকার করে অগ্নিকাণ্ডের জন্য স্থানীয় মাফিয়া ও দাগী অপরাধীদের দায় দিয়েছে সরকারপন্থিরা।

এ অপরাধীগোষ্ঠীই দেশটিতে তিন মাস ধরে চলমান সহিংসতা ও সংঘর্ষ উসকে দিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে ডানপন্থিদের মাঠে নামিয়েছে, ভাষ্য তাদের।  

চলতি বছরের এপ্রিলে চাকরিজীবীদের পেনশনের পরিমাণ কমানোর একটি আইন নিয়ে সাধারণ জনগণ ফুঁসে উঠলে সংঘাত-সহিংসতা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।

১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা ড্যানিয়েল ওর্তেগার পদত্যাগের দাবিতে সাধারণ ছাত্র ও পেনশনভোগীদের বিক্ষোভ দমাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থান নিলে আন্দোলন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষে তিন মাসে ১৭০ এর বেশি প্রাণহানির পর শান্তি ফেরাতে দুই পক্ষ আলোচনায় বসে।

ক্যাথলিক চার্চের মধ্যস্থতায় শুক্রবার দুই পক্ষই অস্ত্রবিরতির অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিলে অস্থিরতা বন্ধে আশাবাদ বাড়ে।

সহিংসতার ঘটনা খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে দেশে প্রবেশের অনুমতি এবং একটি ট্রুথ কমিশন গঠনেও ঐক্যমত্য হয়।

২০১৬ সালে ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে পুননির্বাচিত হওয়া ওর্তেগা পুর্ণমেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে জোর করলেও ওই বিষয়ে সমঝোতা হয়নি বলে বিবিসি জানিয়েছে।

শনিবারের ‘মানুষ পুড়িয়ে মারার’ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস)।

মানবতাবিরোধী এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা যেন পার না পায়, তা নিশ্চিত করতে নিকারাগুয়ার সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান ওএএসের প্রধান লুইজ আলমাগ্রো।