এমনকি কলমেও ভয় কিমের

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সম্পর্কে নানা জিজ্ঞাসার উত্তর সহজে মিললেও কৌতূহলী মন আটকে যায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের কাছে এসে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2018, 04:25 AM
Updated : 13 June 2018, 04:50 AM

নিরাপত্তার ঘেরাটোপে কিমের সম্পর্কে জানা যায় খুব কমই; সেই নিরাপত্তা যে কতটা কঠোর তা দেখা গেল সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে।

ঐতিহাসিক এই বৈঠকের যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষরের সময় কলম নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে প্রমাণিত হয় কিমের গোপনীয়তা রক্ষায় তার দেশ কতটা সতর্ক।

মঙ্গলবার যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষরের সময় ভিডিওতে কলম নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তা নজরে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইলের সাংবাদিকদের। এক প্রতিবেদনে তা তুলেও ধরেছেন তারা।

যৌথ ঘোষণার দলিলে সই করতে যখন বসেছেন ট্রাম্প ও উন, তখন দুজনের সামনেই ছিল একটি করে কলম। স্বাক্ষরের আগ মুহূর্তে দেখা যায়, কিমের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা দস্তানা পরে সাদা একটি কাপড়ে কলমটি ঘষছেন। পরিচ্ছন্ন কিংবা জীবাণুমুক্ত করার আগে তা কিমের হাতে দিতে দিতে চাচ্ছিলেন না তিনি।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে থাকা কলমটি নিয়ে ঘষাঘষিতে উত্তর কোরিয়ার একজন নিরাপত্তাকর্মী; যদিও পরে তা ব্যবহার করেননি কিং জং-উন (ছবি: রয়টার্স)

ঠিক ওই মুহূর্তে এগিয়ে আসেন কিমের বোন কিম উ-জং, যিনি এখন ভাইয়ের উপদেষ্টার মতো গুরুত্বপূর্ত পদের দায়িত্ব সামাল দিচ্ছেন।

ত্বরিত কিম উ-জং আরেকটি কলম বাড়িয়ে দেন ভাইয়ের হাতে; এই কলমটিই নিরাপদ মনে করছিলেন তিনি, কারণ এটি তিনি সঙ্গে করেই নিয়ে এসেছিলেন, এটি তিনি বের করেন তার জ্যাকেটের পকেট থেকে।

এরপর বোনের দেওয়া কলমেই কোরিয়া উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের অঙ্গীকারের ঐতিহাসিক দলিলে সই করেন ৩৫ বছর বয়সী রাষ্ট্রনেতা কিম।

যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষরের সময় কিম জং-উনের পেছনে দাঁড়ানো বোন কিম উ-জং; তার দেওয়া কলমেই সই করেন কিম (ছবিটি নিউ ইয়র্ক টাইমসের সৌজন্যে পাওয়া)

জীবাণু অস্ত্র নিয়ে সতর্ক থাকার পাশাপাশি কিমের দেহের কোনো নমুনা যেন কারও হাতে না পড়ে, সে বিষয়ে সব সময়ই সতর্ক কমিউনিস্ট রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী।

সিঙ্গাপুরে কিমের জন্য একটি ভাম্যমাণ টয়লেটও নেওয়া হয়েছিল বলে খবর বেরিয়েছে ইতোমধ্যে। বলা হচ্ছে, কিমের মলের নমুনাও যেন কারও হাতে না পড়ে, সেজন্যই এই সতর্কতা।

বাবার মৃত্যুর পর ২০১১ সালে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতা পাওয়া কিম এই প্রথম চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া বাদে কোনো দেশ সফর করলেন। চীনে তার সাম্প্রতিক দুটি সফরও হয়েছিল অত্যন্ত গোপনে, সফর শেষ হওয়ার পরই কেবল বিশ্ববাসী তা জানতে পেরেছিল।

সিঙ্গাপুরেই কিমের প্রথম ঘটা করে বিদেশ সফর। আর তাতে কিমের বুলেটপ্রুফ লিমুজিন ঘিরে নিরাপত্তা রক্ষীদের সার্বক্ষণিক সতর্ক পাহারা ছিল দেখার মতো।