স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সিঙ্গাপুরের সানতোসা দ্বীপের কাপেলা হোটেলে বৈঠকটি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৈঠকে দুই নেতা কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক অচলাবস্থা অবসানের পথ বের করার চেষ্টা করবেন।
তাদের এ বৈঠক সফল হলে তা উত্তর-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তার চিত্রে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনতে পারে। এটা অনেকটা ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের চীন সফরের মতো হতে পারে, যার পর থেকে চীনের রূপান্তর ঘটেছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, ঐতিহাসিক সাক্ষাতের শুরুর পর্বে বিলাসবহুল কাপেলা হোটেলের দুই পাশ থেকে দুই নেতা হেঁটে এসে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার পতাকা দিয়ে সজ্জিত একটি দৃশ্যপটের সামনে প্রথমবারের মতো পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে দৃঢ়ভাবে করমর্দন করেন।
কিম বলেন, “আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে খুশি হলাম মিস্টার প্রেসিডেন্ট।”
উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আমি সত্যি গর্ব অনুভব করছি। আমরা মহৎ একটি আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছি এবং তা ব্যাপকভাবে সফল হবে বলে আশা করছি। আমার ধারণা এটি সত্যিই সফল হতে যাচ্ছে এবং আমাদের মধ্যে গভীর সম্পক হবে, আমার কোনো সন্দেহ নেই।”
উত্তরে কিম বলেন, “ওয়েল, এ পর্যন্ত আসাটা সহজ ছিল না। অতীতে আমাদের পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা বসানো ছিল, কিন্তু আমরা সেগুলো সব অতিক্রম করেছি এবং আজ আমরা এখানে।”
কাপেলা হোটেলে পৌঁছে তাদের লিমুজিন থেকে নামার সময় উভয় নেতাকেই বেশ সিরিয়াস মনে হয়েছে বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক।
এরপর কিমকে পথ দেখিয়ে কাপেলা হোটেলের পাঠাগারের দিকে নিয়ে যান ট্রাম্প, সেখানে শুধু দোষাভীদের নিয়ে বৈঠক শুরু করেন তারা।
প্রায় আধ ঘন্টা ধরে কথাবার্তা বলার পর ট্রাম্প ও কিম আবার দেখা দেন। হোটেলের বারান্দা দিয়ে পাশাপাশি হাঁটেন, তারপর আবার বৈঠক কক্ষে ঢুকে যান। সেখানে তারা তাদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হন।
বারান্দায় হাঁটার সময় এক দোভাষীর মাধ্যমে কিম ট্রাম্পকে বলেন, “আমার ধারণা পুরো বিশ্ব এই মূহুর্তটি দেখছে। বিশ্বের অনেক মানুষ এই দৃশ্যকে উদ্ভট কল্পনা, সায়েন্স ফিকশন মুভি বলে মনে করবে।”
কিমও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা এই বৈঠক সম্পর্কে সব ধরনের সংশয় ও অনুমান পার হয়ে আসতে পেরেছি এবং আমার বিশ্বাস এটি শান্তির জন্য শুভ হবে।”
দুই নেতার মুখোমুখি বৈঠক ৪০ মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় কিম সিঙ্গাপুর ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প ও কিমের ব্যক্তিগত বৈঠক মোট ৩৮ মিনিট স্থায়ী হয়েছে।