প্লাস্টিক দূষণ ‘কমানোর পদক্ষেপ’ ৫০টি দেশের

প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত পণ্যের দূষণ কমিয়ে আনতে ৫০টি দেশ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2018, 08:38 AM
Updated : 5 June 2018, 08:38 AM

গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ শিগগিরই একবার ব্যবহারযোগ্য এমন প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি, খবর বিবিসির। 

শ্রীলঙ্কা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে খাদ্য পণ্যের ‘ওয়ান টাইম প্যাক’ বানানোর জন্য ব্যবহৃত স্টিরিওফোম; জৈব পদ্ধতিতে পচানো যাবে এমন ব্যাগ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে চীন।

এসব পদক্ষেপের পরও নদী ও সমুদ্রে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের প্রবাহ কমাতে অনেক কিছুই করা প্রয়োজন বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের প্রতিবেদনটির লেখক বিশেষজ্ঞরা । অনেক দেশ প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে ভালো ভালো নীতি নিলেও প্রয়োগের ঘাটতির কারণে তা ব্যর্থ হচ্ছে বলেও মন্তব্য তাদের।

অনেক উন্নয়নশীল দেশেই প্লাস্টিকের ব্যাগ নর্দমা আটকে দিয়ে বন্যার কারণ হিসেবে আবির্ভূত হয়। কোনো কোনো সময় গৃহপালিত পশুপাখিও এ ধরনের ব্যাগ খেয়ে বিপদ বাড়িয়ে তোলে।

প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে বিভিন্ন দেশের নেওয়া নীতি মিশ্র ফলাফল বয়ে এনেছে বলেও জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ক্যামেরুনে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ; প্রতি কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে দেশটিতে অর্থ দেওয়ারও বিধান আছে; তা সত্বেও সেখানে চোরাপথে প্লাস্টিক ব্যাগ ঢুকছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বেশ কয়েকটি দেশে প্লাস্টিক বিষয়ে বিধিনিষেধ থাকলেও সেসব বিধিনিষেধ কার্যকর করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।

প্রতিবেদনে অ্যাবাকা হেম্প থেকে জেইন পর্যন্ত প্লাস্টিকের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায় এমন ৩৫টি জৈব উপকরণের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় আছে খরগোশের পশম, সামুদ্রিক ঘাস ও ছত্রাক দিয়ে তৈরি ফোমের নামও।

দুধের বর্জ্য থেকে ছানার সুতা তৈরি করা প্রতিষ্ঠান কিউমিলচের কথাও প্রতিবেদনে এসেছে; এসেছে আনারসের পাতা থেকে তৈরি প্লাস্টিকের বিকল্প পিনাটেক্সের বিষয়ও।

অনেক নীতিনির্ধারক অবশ্য জৈব বিকল্পের সম্ভাবনাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনেরও পরামর্শ দিয়েছেন।

তারা বলছেন, গাড়ির বিকল্প জ্বালানি হিসেবে পাম ওয়েলের ব্যবহারের কারণে রেইন ফরেস্টগুলো ধ্বংস করে পাম বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে, এভাবে জৈবজ্বালানি বিষয়ে পরিবেশবাদীদের আগের আশাবাদও বিফল হচ্ছে।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক প্রধান এরিক সোলহেইম বলেন, প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে আনতে যন্ত্রণাহীন ও লাভজনক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া যায় বলেও তাদের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে।

“এগুলোর ফলে জনগণ ও ধরিত্রীর বিশাল উপকার হবে এবং এটি দূষণের মাত্রা কমাতে খরচের হারও কমিয়ে আনবে। প্লাস্টিক আসলে সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে আমরা এটি দিয়ে যা করি, তা,” বলেন তিনি।

প্রতিবেদনে প্লাস্টিক বর্জ্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কর ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করে সেটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নকেই সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্লাস্টিক দূষণ কমাতে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা, রিসাইক্লিংয়ের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়াসহ ব্যবসায়ীদের বিস্তৃত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও জোর দিয়েছে বলেছেন তারা।