রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
অপরদিকে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিমের সঙ্গে ১২ জুনের শীর্ষ বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদিও এর আগে বৈঠকটি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
সিউলের ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট মুন জানান, শনিবার উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে বৈঠকে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘হতে হবে’ বলে তিনি ও কিম একমত হয়েছেন।
শনিবার বিকালে দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অসামরিক গ্রাম পানমুনজোমে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন এক আকস্মিক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুন বলেছেন, “চেয়ারম্যান কিম ও আমি একমত হয়েছি যে, ১২ জুনের শীর্ষ সম্মেলন সাফল্যজনকভাবেই হওয়া উচিত এবং কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের অভিষ্ট এবং চিরস্থায়ী শান্তির শাসনের সম্ভাবনা রুদ্ধ করা উচিত নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রর ও উত্তর কোরিয়ার নজিরবিহীন শীর্ষ বৈঠককে কেন্দ্র করে সপ্তাহজুড়ে চলা কূটনৈতিক উত্থান-পতনের পর পানমুনজোমের বৈঠকটি ঘটনায় সর্বশেষ নাটকীয় মোড় সৃষ্টি করেছে। পানমুনজোমের বৈঠক থেকে জোরালোভাবে এ ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে কিম-ট্রাম বৈঠকের সম্ভাবনা ধরে রাখতে কোরিয়ার নেতারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনার বিষয়ে পূর্বপরিকল্পনা মতোই ‘তার অটল ইচ্ছার’ কথা জানিয়েছেন কিম।
১২ জুন সিঙ্গাপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের ঐতিহাসিক বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন নেতাদের বিভিন্ন মন্তব্যে ক্ষিপ্ত উত্তর কোরিয়া বৈঠক বাতিল করার হুমকি দেয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় তৎপরতা শুরু করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন। ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ওয়াশিংটন যান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে ওয়াশিংটন থেকে সিউলে ফিরে মুন জানান, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শত্রুতামূলক সম্পর্কের ইতি ঘটাতে ও দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা শুরু করতে ট্রাম্পের একটি ‘দৃঢ়’ বার্তা পাঠিয়েছেন।
কিন্তু ওই দিনই কিমকে দেওয়া এক চিঠিতে উত্তর কোরিয়ার ‘শত্রুতামূলক’ মনোভাবের কথা উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া বৈঠক বাতিল ঘোষণার পরপরই উত্তর কোরিয়া সংহতির সুরে বলেছিল, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘যে কোনো সময়’ কথা বলতে প্রস্তুত।
শনিবার উত্তর কোরিয়ার এ সম্প্রীতিমূলক বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে ট্রাম্প বৈঠকটি আবার হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, “তারা (উত্তর কোরিয়া) খুবই চমৎকার বিবৃতি দিয়েছে। আমরা দেখব কী হয়- এটি (বৈঠক) ১২ জুনেও হতে পারে।
“আমরা এখন তাদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা বৈঠক করতে খুবই ইচ্ছুক। আমরাও সেটি করতে পছন্দ করব।”
শনিবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে রোববার হোয়াইট হাউসের একটি টিম পূর্ব পরিকল্পনা মতো সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।