ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হাসপাতালে

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে পশ্চিম তীরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2018, 03:54 AM
Updated : 21 May 2018, 04:55 AM

রোববার তাকে হাসপাতালে আনা হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা; কিন্তু নেতার অবস্থা সম্পর্কে তারা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

৮২ বছর বয়সী আব্বাসকে এ নিয়ে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো হাসপাতালে যেতে হল। এবার অন্তত এক রাত তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার আব্বাসের কানে ছোট একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার দিবাগত রাতে কিছু সময়ের জন্য তাকে ফের রামাল্লার আল-ইসতিশারি হাসপাতালে ফিরতে হয়েছিল, জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা।

এরপর রোববার ফের তড়িঘড়ি করে তাকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়, এবার শুধু ‘মেডিকেল টেস্টের’ জন্য তাকে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রোববার রাতে আল-ইসতিশারি হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডাঃ সায়েদ আল সারাহনেহ বেসরকারি ওই হাসপাতালটির সামনে সাংবাদিকদের বলেন, “তিন দিন আগে আব্বাসের মধ্যকর্ণে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল, তারপর আজ সকালে মেডিকেল টেস্টের জন্য তিনি এসেছেন। সবগুলো পরীক্ষাই সাধারণ এবং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই।”

আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) তাদের টুইটার একাউন্টে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি পক্ষের প্রধান মধ্যস্থতাকারী সায়েব এরিকাত হাসপাতালে গিয়ে আব্বাসকে দেখে এসেছেন।

বিবৃতিতে এরিকাতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট শারীরিকভাবে ভাল অবস্থায় আছেন।”

এরিকাতের এক সহযোগী জানিয়েছেন, আব্বাস তার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কৌতুকও করেছেন। সোমবার অথবা মঙ্গলবার আব্বাস হাসপাতাল থেকে ফিরবেন এমন আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রামাল্লা থেকে ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের কানের অস্ত্রোপচারের পর জটিলতা দেখা দেওয়ায় আব্বাসকে ফের হাসপাতালে যেতে হয়েছে। আব্বাসের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু আব্বাসের শারীরিক অবস্থার সঙ্গে কানের অস্ত্রোপচারের সম্পর্ক নেই বলে আল-ইসতিশারি হাসপাতালের এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্র বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট আগামীকাল পর্যন্ত হাসপাতালে থাকবেন। বুকের ব্যথার চিকিৎসার জন্য তাকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।”

ধূমপানে আসক্ত আব্বাস ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিতে নিউ ইয়র্কে গিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

২০০৪ সালে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর পশ্চিমা সমর্থিত আব্বাস ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট হন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে আয়োজিত ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু ২০১৪ সালে ওই শান্তি আলোচনা ভেস্তে যায়।

আব্বাস পিএলওর কার্যনির্বাহী কমিটিরও চেয়ারম্যান। ৪ মে এই পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনর্নির্বাচিত হন তিনি।

জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দূতাবাস খোলাকে কেন্দ্র করে ১৪ মে ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এ নিয়ে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উত্তেজনা চলার মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট।