শনিবার নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রথম এ খবর প্রকাশ করে। পরে ট্রাম্প জুনিয়রের একজন আইনজীবী খবরটি নিশ্চিত করেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৩ অগাস্ট এরিক প্রিন্সের আয়োজনে ওই বৈঠক হয়।
ইসরায়েলের প্রাইভেট মিলিটারি কন্ট্রাক্টর ব্ল্যাকওয়াটার’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান এরিক নিজেও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। দেশটির একটি কনসালটিং ফার্মের সহ প্রতিষ্ঠাতা জোয়েল জামেলও ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
তবে বৈঠকে কোনো সফলতা আসেনি বলে শনিবার মন্তব্য করেন ট্রাম্প জুনিয়রের আইনজীবী অ্যালান ফুটারফার।
ই-মেইলে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এরিক প্রিন্স, জর্জ নাদের এবং অন্য এক ব্যক্তির (যিনি খুব সম্ভবত জোয়েল জামেল ছিলেন) সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তারা ট্রাম্প জুনিয়রকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার এবং বিপণন কৌশল নিয়ে পরামর্শ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আগ্রহ দেখাননি এবং সেখানেই সেটি শেষ হয়।”
জামেলের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন একটি কোম্পানি ট্রাম্পকে নির্বাচনী প্রচারে সহায়তা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার ভুয়া একাউন্ট খুলে সেগুলোর সাহায্যে ‘অনলাইনে গোপন প্রচার চালিয়েছে’ বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, লেবানন-আমেরিকান ব্যবসায়ী জর্জ নাদের সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজদের পক্ষ থেকে ট্রাম্প জুনিয়রকে তার বাবাকে ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী করতে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
অথচ ১৯৭৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে সব ধরনের অর্থ গ্রহণ নিষিদ্ধ। পরে ওই নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ করে কোনো রাজনৈতিক দল বিদেশি রাষ্ট্র থেকে অর্থ সহায়তা নেওয়া যাবে না বলা হয়।
ওয়াশিংটনে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের স্পেশাল কাউন্সিলর রবার্ট মুলার ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত করছেন।
মুলারের একটি প্রতিনিধি দল জামেলের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে গত মাসে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
দলটি জামেলের ফার্মের কার্যক্রম এবং নাদেরের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে তদন্ত করছে।
রাশিয়া ছাড়াও অন্যান্য দেশ ট্রাম্পকে নির্বাচনে জিততে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিল- সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ট্রাম্প জুনিয়রের বৈঠক সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে বলা হয়।
মুলারের তদন্তকারী দল এরই মধ্যে ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, তেল আবিব ও অন্যান্য কয়েকটি জায়গায় বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানায় নিউ ইয়র্ক টাইম।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের দাবি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি মুলারের মুখপাত্র পিটার কার।
জামেলের আইনজীবী রয়টার্সকে বলেন, “তার মক্কেল ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে সাহায্যের কোনো প্রস্তাব দেননি, ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির থেকে কিছু নেননি বা দেননি, এমনকি কিছু করতে বলেননি বা তাকে কিছু করতে বলা হয়নি।”
তার মক্কেলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রভাব খাটিয়ে ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারের’ অভিযোগও সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।