সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে করারোপ করবে উগান্ডা

উগান্ডা সরকার রাজস্ব আয় বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ওপর আগামী জুলাই মাস থেকে নতুন কর আরোপের পরিকল্পনা করেছে।

>>রয়টার্স
Published : 22 April 2018, 04:01 PM
Updated : 22 April 2018, 04:01 PM

মানবাধিকারকর্মীরা এর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি প্রেসিডেন্ট ইউরি মুসাভেনির বাকস্বাধীনতার গলা টিপে ধরা এবং তার দীর্ঘ ৩২ বছরের শাসনামলে ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ না রাখার আরেকটি উদ্যোগ।

উগান্ডায় ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সরকারের এ পদক্ষেপ তারা সাদরে গ্রহণ করবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশন’ এর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় আফ্রিকায় এমনিতেই ‘ডেটা কস্ট’ (ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ) বেশি।

টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে  উগান্ডার অর্থমন্ত্রী মতিয়া কাসাইজা সরকারের কর পরিকল্পনা জানিয়ে রয়টার্সকে বলেন, মোবাইল ফোনে হোয়াটস অ্যাপ, টুইটার এবং  ফেইসবুক ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীকে দৈনিক ২০০ উগান্ডান শিলিং (০.০২৭ ডলার)  কর দিতে হবে।

নতুন করারোপের কারণে জনগণ ইন্টারনেট ব্যবহার কমিয়ে দিতে পারে,  এমন আশাঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি আরো বলেন, “দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় এবং বিদ্যুৎ বাড়াতে আমাদের অর্থ চাই।”

এর মধ্য দিয়ে জনগণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আরো বেশি করে উপভোগ করতে পারবে বলেই দাবি অর্থমন্ত্রীর।

তবে মানবাধিকারকর্মী ও ব্লগার রোজবেল কাগুমির বলছেন, “বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীরাও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে সরকারের কর প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন।

উগান্ডার চার কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় দুই কোটি ৩৬ লাখ মানুষ মোবাইল এবং প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

জুলাইয়ে উগান্ডায় নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হবে। ওই বাজেটেই থাকবে করারোপের প্রস্তাব।

স্যোশাল মিডিয়ার ওপর করারোপের প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর তা পুনঃপর্যালোচনার জন্য এ সপ্তাহেই পার্লামেন্টে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী কাসাইজা।

২০১৬ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় উগান্ডা সরকার ফেইসবুক, টুইটার ও হোয়াটস অ্যাপ বন্ধ করে রেখেছিল।

আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোর সরকারও তাদের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনের জবাবে এ সেবাগুলো বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।

পূর্ব আফ্রিকায় ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেওয়া দেশগুলোর মধ্যে তানজানিয়ায় গত মাসে নতুন একটি আইন চালু হয়েছে। এ আইন অনুযায়ী, কোনো নাগরিক কোনো ধরনের ব্লগ বা ওয়েবসাইট চালালে তাকে বছরে ১০ লাখ তানজানিয়ান শিলিং (৪৪০ মার্কিন ডলার) লাইসেন্স ফি দিতে হবে।