সিরিয়ার ‘পারমাণবিক চুল্লি’ ধ্বংসের দায় স্বীকার ইসরায়েলের

বিমান হামলা চালিয়ে সিরিয়ার কথিত একটি পারমাণবিক চুল্লি ধ্বংসের দায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2018, 07:43 AM
Updated : 21 March 2018, 08:12 AM

২০০৭ সালে সিরিয়ার ৪৮০ কিলোমিটার ভেতরের দেইর-আল-জোরের কাছে মরুভূমিতে অবস্থিত কাবুর স্থাপনায় ওই হামলাটি চালানো হয়েছিল বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েল ও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য বড় ধরনের হুমকিকে সরিয়ে দিতেই ওই হামলাটি চালানো হয়েছিল, যা অন্যদের জন্যও ছিল ‘বার্তা’।

‘অপারেশন আউট অব দ্য বক্স’ নিয়ে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে থাকা সেন্সরশিপ উঠে যাওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী বুধবার এ দায় স্বীকার করল।

একইসঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আল কাবুর স্থাপনাটি ধ্বংসের মুহুর্তের ছবি ও ককপিটের ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে।

সরবরাহ করা এসব তথ্য, ছবি ও ভিডিও সঠিক কিনা, তা নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স।

“ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি এমন কোনো স্থাপনা প্রতিষ্ঠার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না, ২০০৭ সালে পারমাণবিক চুল্লিতে চালানো হামলার বার্তা ছিল এটাই। ২০০৭ সালে এ বার্তা দেওয়া হলেও এটা এখনও একইরকমই আছে, নিকট ও দূর ভবিষ্যতেও এই বার্তা বলবৎ থাকবে,” বিবৃতিতে বলেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল গাদি এইজেনটুয়াট।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সিরিয়ার মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের আরও শক্ত পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছিলেন; এর মধ্যেই দশককাল আগের ওই হামলা সম্পর্কে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার করল।

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ নিয়েও ধারাবাহিক হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।

“এখন নয়, ১০ বছরের মধ্যে নয়, কখনোই নয়,” বলছেন তিনি।

ইসরায়েল শঙ্কিত হলেও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির লক্ষ্য ‘শান্তিপূর্ণ’ বলে দাবি করে আসছে ইরান।

ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে পারে সিরিয়ার ভেতরে এমন ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা নির্মাণ কিংবা লেবাননের ইরানসমর্থিত শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে আধুনিক অস্ত্র সরবরাহেও আপত্তি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর।

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সমৃদ্ধকরণ বন্ধের বিষয়ে বেশ চিন্তিত। আল কাবুরের ওই পরমাণু চুল্লিতে পিয়ংইয়ং-ই মালমশলা যুগিয়েছিল বলে এর আগে দাবি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সিরিয়ার ওই স্থাপনায় পারমাণবিক চুল্লি ছিল বলে ধারণা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনেরও; আল কাবুরে চুল্লি থাকার বিষয়ে সিরিয়ার ‘আগেই ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল’ বলেও মন্তব্য করেছিল তারা।

১৯৭০ সালে হওয়া পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ সিরিয়া শুরু থেকেই আল কাবুরে পারমাণবিক চুল্লির অস্তিত্বের কথা অস্বীকার করে আসছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দামেস্কর কখনোই পারমাণবিক সহযোগিতা ছিল না বলেও দাবি তাদের।