নোবেল পুরস্কার চির অধরাই রয়ে গেল হকিংয়ের

পদার্থবিদ হিসাবে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেলেও কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পুরস্কার আর পাওয়া হয়নি স্টিভেন হকিংয়ের। তার আগেই চির বিদায় নিয়েছেন তিনি।

>>আইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2018, 02:33 PM
Updated : 14 March 2018, 04:33 PM

ব্রিটিশ এই পদার্থবিদ সবচেয়ে বেশি পরিচিত অপেক্ষবাদ ও ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে তার তত্ত্বের জন্য। ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ এর মতো বই লিখে তিনি বিজ্ঞানের জটিল বিষয়কেও সাধারণ মানুষের অনেক কাছাকাছি নিয়ে গেছেন।

কাজ করেছেন মহাবিশ্বের জন্ম ও এর বিকাশ নিয়ে। অপেক্ষবাদ ও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সমন্বয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্যের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দিয়ে বর্তমান সময়ের সেরা বিজ্ঞানীর স্থান দখল করেছিলেন স্টিভেন হকিং। সে হিসাবে তাকে নোবেল পুরস্কারের যোগ্য বললেও অত্যুক্তি হবে না।

তবে তার এ ব্যাখ্যা কেবল তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে হয়েছে। ব্ল্যাক হোল এবং বিগ ব্যাং নিয়ে তার তত্ত্বের ঠাঁই হয়েছে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে। কিন্তু বাস্তবে এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তাই পরীক্ষার মাধ্যমে হকিংয়ের তত্ত্বটির সত্যতা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব ছিল না।

বিজ্ঞান বিষয়ক মার্কিন লেখক এবং ‘দ্য সায়েন্স অব লিবার্টি’ গ্রন্থের রচয়িতা টিমোথি ফেরিসের মতে, আসলে হকিংয়ের তত্ত্বের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো উপায় এখনো মানুষের জানা নেই। ব্ল্যাকহোল পর্যবেক্ষণ করা আজকের দিনে দুরূহ।

নোবেল পুরস্কারের নিয়মানুযায়ী, মানবজীবন বা মানবসেবায় কারো উল্লেখযোগ্য অবদান এবং পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোনো যুগান্তকারী আবিষ্কার বা উদ্ভাবন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণের ভিত্তিতে সাধারণত পুরস্কারটি দেওয়া হয়। আর মরণোত্তর নোবেল পুরস্কার দেওয়ার নিয়ম নেই।

হকিংয়ের তত্ত্বের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো প্রযুক্তি এখনো মানুষের হাতে না থাকায় তার জীবদ্দশায় তা প্রমাণ করা যায়নি। তাই নোবেলও তার মেলেনি।

তবে অদূর ভবিষ্যতে মানুষ হকিংয়ের তত্ত্ব যাচাইয়ের পথ হয়ত খুঁজেও পেতে পারে। তখন এর সত্যতা হয়ত যাচাই করা সম্ভব হবে। কিন্তু মরণোত্তর নোবেলের নিয়ম না থাকায় তখনো হকিং সেই পুরস্কারের ভাগীদার হতে পারবেন না।

মাত্র ২২ বছর বয়সে বিরল প্রকৃতির মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত হকিং এ অসুখ নিয়েই ৭৬ বছর বয়স পর্যন্ত লড়ে গেছেন। কাজও করে গেছেন আমৃত্যু। অবশেষে বুধবার ভোররাতে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।