শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, নিষেধাজ্ঞাও পিয়ংইয়ংকে না দমালে যুক্তরাষ্ট্র ‘ফেইজ টু’-র পথে হাঁটবে, যা ‘বিশ্বের জন্য খুব, খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে’।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি, ২৭টি প্রতিষ্ঠান ও ২৮টি জাহাজের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ঘোষণা করা হয় বলে খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘের অন্য এক নিষেধাজ্ঞার আওতায় বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেও কালো তালিকায় রাখার প্রস্তাব করেছে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট, যার ‘লক্ষ্য হচ্ছে- উত্তর কোরিয়ার তেল ও কয়লা বিক্রির অবৈধ চোরাচালানি বন্ধ করা’।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পিয়ংইয়ংয়ের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উত্তর কোরিয়া বলছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে মিলে মার্কিনিরা তাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি তৈরি করছে। এ কারণেই কোরীয় অঞ্চলে একের পর এক যৌথ মহড়া চালাচ্ছে ওয়াশিংটন।
মহড়া বন্ধ না হলে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে পর্যায়ক্রমে এমন পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের পথে হাঁটারও হুমকি দিয়েছিল তারা।
সম্প্রতি তারা যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছুড়ছে, তার বেশ কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম বলেও ধারণা অনেক পর্যবেক্ষকের। দুই পক্ষের এই উত্তেজনায় নিয়মিত ঘি ঢালছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং উন।
গত বছর ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই উন তার সঙ্গে একের পর এক কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছেন।
৭ মাস আগে গত বছরের অগাস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়াকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। যদিও তার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবারই পিয়ংইয়ং সমস্যার কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহের কথা জানাচ্ছিলেন।
শুক্রবার অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ফের ‘সামরিক বিকল্পের’ ইঙ্গিত দেন।
“নিষেধাজ্ঞা যদি কাজ না করে, তাহলে আমরা ফেইজ টু-তে যাবো। এটি খুবই রূঢ় হতে পারে, হতে পারে বিশ্বের জন্য খুব, খুব দুর্ভাগ্যজনক,” বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এ নিষেধাজ্ঞায় এক তাইওয়ানি নাগরিকের পাশাপাশি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে চীন, হংকং, তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরের বেশ কয়েকটি জ্বালানি ও জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে এখন এসব প্রতিষ্ঠান ও তাইওয়ানি নাগরিকের কোনো সম্পদ থাকলে সেগুলো জব্দ করা হবে। মার্কিন প্রতিষ্ঠান বা নাগরিকদেরও এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনে নিষেধ করা হবে।
উত্তর কোরিয়ার জ্বালানি ও জাহাজ পরিচালনা খাতকে বিপর্যস্ত করতেই নতুন এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের; এ ব্যবস্থা পিয়ংইয়ংকে আরও একঘরে করবে বলেও মন্তব্য তাদের।