আদালত-সরকার দ্বন্দ্বের জেরে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন দেশজুড়ে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেন।
ইয়ামিনের অনুরোধে ২০ ফেব্রুয়ারি দেশটির পার্লামেন্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৩০ দিন বাড়ানোর অনুমোদন দেয়। নতুন মেয়াদ শেষ হবে ২২ মার্চে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুমের জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্র খুবই হতাশ।”
মালদ্বীপকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মালদ্বীপের জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে এবং দেশটির সাংবিধানিক সংকটের সমাধান এখনও হয়নি- এ যুক্তিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন।
ইয়ামিন দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার পর থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বেড়েছে। ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে দেশটিকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এক বিবৃতিতে ইইউ মুখপাত্র বলেন, “জরুরি অবস্থা ঘোষণার কারণে মালদ্বীপের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইনও মালদ্বীপে জরুরি অবস্থাকে ‘গণতন্ত্রের ওপর পুরোদস্তুর আক্রমণ’ বলে বর্ণনা করেন।
আবদুল্লাহ ইয়ামিন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মালদ্বীপে আইনের শাসনের অবনতি হয়েছে।
তবে এমাসের শুরুতে পরিস্থিতি তুঙ্গে উঠে। ১ ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক আদেশের জেরে গভীর রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়।
সুপ্রিমকোর্ট সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ ৯ বিরোধী দলীয় নেতার পুনর্বিচার এবং অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেওয়াসহ ১২ বিরোধীদলীয় এমপি’কে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন আদালতের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম এবং প্রধান বিচারপতি আবদুল্লাহ সাঈদের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।