কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ফ্লোরিডার রাজধানীতে সমাবেশ

যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডার হাইস্কুলে বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সমাবেশের জন্য রাজ্যের রাজধানীতে জড়ো হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2018, 01:45 PM
Updated : 21 Feb 2018, 01:45 PM

বন্দুক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে আইনপ্রণেতাদের ওপর আরো চাপ সৃষ্টি করাই তাদের লক্ষ্য। বিবিসি জানায়, প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী ফ্লোরিডার রাজধানী তালাহাসিতে পৌঁছেছে।

ফ্লোরিডার বিচারবিভাগ হামলায় ব্যবহার হওয়া রাইফেলের মত অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাব ভোটে বাতিল করার কয়েকঘণ্টা আগেই ওই শিক্ষার্থীরা তালাহাসিতে পৌঁছায়। বুধবার তারা আবারো সেখানে জড়ো হচ্ছে।

এরপর স্টেটহাউজে সমাবেশ করাসহ আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে তারা। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আইনপ্রণেতাদের এ বার্তাই দিতে চায় যে, “যথেষ্ট হয়েছে’, ‘আর কখনো নয়’, থামান, ‘এখনই থামান’।

গত বুধবার বিকালে ফ্লোরিডায় পার্কল্যান্ডের মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে  বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে ১৭ জন নিহত হয়। এদের ১৪ জন বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী।

এ হামলার পর থেকেই স্কুলটির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। অস্ত্র আইন সংস্কারের দাবিতে তারা বিক্ষোভ করছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজ্যের কর্মকর্তাদের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে।

যুবসমাজ পরিচালিত বন্দুকবিরোধী এমন আন্দোলন এটিই প্রথম। স্কুলের বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা এই প্রথম বহুল বিতর্কিত বন্দুক সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। গোটা যুক্তরাষ্ট্রেই তাদের এ আন্দোলন সাড়া জাগিয়েছে।

বুধবার ফ্লোরিডার রাজধানীতে তাদের সমাবেশটিও আইনপ্রণেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য প্রথম সংগঠিত বিক্ষোভ। হামলাকারী নিকোলাস ক্রুজ মানুষ মারতে যে ধরনের বন্দুক ব্যবহার করেছিল ঠিক সেইরকম আধা-স্বয়ংক্রিয় এআর-১৫ মডেলের রাইফেল নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।

কিন্তু এত প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখেও ফ্লোরিডার স্টেটহাউজ এ ধরনের রাইফেল নিষিদ্ধের বিল আনার একটি প্রস্তাব মঙ্গলবার ভোটে নাকচ করেছে।

রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত স্টেটহাউজে প্রস্তাবটি ৩৬-৭১ ভোটে বাতিল হয়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীই কেঁদে ফেলেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ১৬ বছরের শেরিল অ্যাকুয়ারোল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “এতজন (আইনপ্রণেতা) বিপক্ষে ভোট দিয়েছে দেখে আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে, হাজার হলেও এটি আমার স্কুলের বিষয়। তারা কিভাবে হৃদয়হীনের মত এত দ্রুত ‘না’ বোতামে চাপ দিল?”

“আজ তারা এসব বন্ধ করার একটা সুযোগ পেয়েছিল। ভবিষ্যতে আবারও স্কুলে হামলা হলে এরজন্য তারা দায়ী হবে।”

স্পেন্সর ব্লাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমার মনে হচ্ছে আইনপ্রণেতারা আমাকে বা হামলায় বেঁচে যাওয়া অন্যদের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।

“এটা মেনে নিতে পারছি না। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, তাদের আসলে আমাদের নিয়ে কোনো মাথাব্যাথাই নেই।”

ওদিকে ফ্লোরিডায় স্কুলে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ‘বাম্প-স্টক’ ডিভাইসের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশনামায় সই করেছেন।

‘বাম্প ফায়ার স্টক’ ব্যবহার করে একটি রাইফেল থেকে এক মিনিটে শতাধিক গুলি ছোড়া যায়।

গত বছর লাস ভেগাসে কনসার্টে হামলাকারী এ ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করে ৫৮ জনকে হত্যা করে।