সিরিয়ায় মার্কিন হামলায় ‘রুশ’ মৃত্যুতেও নিশ্চুপ মস্কো

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় রাশিয়ার সামরিক ঠিকাদার হতাহত হওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছে মস্কো।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2018, 05:11 PM
Updated : 18 Feb 2018, 05:11 PM

গত সপ্তাহেই সিরিয়ায় মার্কিন হামলায় দুই রুশ যোদ্ধা নিহতের খবর এসেছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষ হয়ে লড়াই করা রাশিয়ানরা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় মারা পড়ার এটিই প্রথম প্রকাশ্য ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কিন্তু ওয়াশিংটন বা মস্কো কেউই এ নিহতের সংখ্যা সরকারিভাবে নিশ্চিত করেনি।

ওদিকে, ক্রেমলিনও রুশ হত্যার ঘটনাকে আমেরিকা বিদ্বেষ ফেনিয়ে তোলার কাজে না লাগিয়ে বরং বিষয়টিকে অনেকটা গুরুত্বহীনভাবেই তুলে ধরছে।

জানুয়ারিতে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রাশিয়ার একটি জঙ্গিবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে। বিমানের পাইলটকে হত্যা করার দাবি করে বিদ্রোহীরা। যদিও রাশিয়ার দাবি, সিরীয় বিদ্রোহীদের হাতে ধরা পড়া এড়াতে পাইলট আত্মহত্যা করেছেন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে বীরের সম্মান দিয়েছে।

ওদিকে, ক্রেমলিন সিরিয়ায় রুশ হতাহত হওয়ার খবর তেমন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেনি। সেখানে কারা নিহত হয়েছে বা কেন তারা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম সারিতে ছিল সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

নিহত রুশদের পরিবার পরিজনরা এখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচশ সদস্যের একটি শক্তিশালী বাহিনী ইসলামিক স্টেটের দখলে থাকা দেইর ইজোরের কাছ দিয়ে ইউফ্রেতিস নদী পার হচ্ছিল। ওই দলটিতে রুশ ঠিকাদাররা এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুসারী খ্রিস্টান মিলিশিয়ারা ছিল বলে জানায় সিএনএন।

দলটি ওই রাতে কি অভিযানে নেমেছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু দলটি যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরিয়ান ডেমক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল-গ্যাস ক্ষেত্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।

আসাদ অনুসারী বাহিনী বিদ্রোহী এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত ঘাঁটিতে গোলা নিক্ষেপ শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র এর জবাবে ব্যাপক বিমানহামলা ও কামানের গোলা নিক্ষেপ শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই সংঘর্ষ চলে।

সিএনএন জানায়, সতর্ক করতে যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডাররা রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যতক্ষণে তারা যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় ততক্ষণে পাল্টা হামলা শুরু হয়ে গেছে।

ওই ঘটনায় আহতদের মস্কো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভ্যালেরি শেবায়েভ তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন।

তিনি সিএনএন’কে বলেন, “ওই দলটিকে একটি ‘খালি’ তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দলটিকে আকাশ পথে সহায়তার কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। যে কারণে সংঘর্ষ শুরু হলে সেখানে ধ্বংস নেমে আসে।”

‘দ্য কনফ্লিক্ট ইন্টেলিজেন্স’ নামের একটি দল সিরিয়া যুদ্ধে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করে। দলের এক কর্মী রুসলান লেভিভ সিএনএন কে বলেন, যদিও সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন মত আছে। আমরা ২০ থেকে ৩০ জন রুশ নাগরিক মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি।

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পাঁচ রুশ নিহত হয়ে থাকতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সিএনএন এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করার পর শুক্রবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ খবরটি উল্লেখ করে বলেন, “এ সম্পর্কে আমাদের কাছে নতুন কোনো তথ্য নেই। এ বিষয়ে আমরা যা বলতে চাই তা বলা হয়ে গেছে।”