বিমানটি ইরান ইসরায়েলে পাঠিয়েছিল দাবি করে নেতানিয়াহু দেশটিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, প্রয়োজন পড়লে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, “ইসরায়েল তাদেরকে (ইরান সরকার) আমাদের গলায় সন্ত্রাসের ফাঁস পরাতে দেবে না।”
নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে ২০১৫ সালের ইরান পরমাণু চুক্তিকে ১৯৩৮ সালের মিউনিখ চুক্তির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে কেবল “বিপজ্জনক ইরানি বাঘকেই মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।”
এ হুমকি থেকে নিজেদের সুরক্ষায় ইসরায়েল কোনো দ্বিধা করবে না জানিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, “প্রয়োজনবোধে আমরা ব্যবস্থা নেব। এ ব্যবস্থা কেবল ইরানের প্রক্সির বিরুদ্ধে নয়, খোদ ইরানের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে।”
মিউনিখ সম্মেলনে রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধি মোহাম্মদ জাভেদ জাফরিকে মিথ্যাবাদী বলেও অ্যাখ্যা দেন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, ইরান মিথ্যাচার করে ইসরায়েলের ভূখন্ডে ড্রোন পাঠানোর কথা অস্বীকার করছে।
ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষ হাতে তুলে ধরে জাফরিকে লক্ষ্য করে নেতানিয়াহু সরাসরি বলেন, “এটি চিনতে পারছেন? আপনার পারা উচিত। এটি আপনাদেরই।”
ইসরায়েল গত সপ্তাহে তাদের আকাশসীমায় ইরানের একটি ড্রোন অনুপ্রবেশ এবং সেটিকে ভূপাতিত করার দাবি করে। ইরান ড্রোন পাঠানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কিন্তু নেতানিয়াহু ইরানের ড্রোন পাঠিয়ে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব ন্যাক্কারজনকভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন এবং ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার অঙ্গীকার করেছেন।
ইরানের ড্রোনের জবাবে সিরিয়ায় ইরানি লক্ষ্যস্থলগুলোতে ইসরায়েল এরই মধ্যে অভিযান শুরু করেছে।
এ অভিযান চলাকালে সিরিয়ার একটি সেনাঘাঁটি থেকে ছোড়া গুলিতে ইসরায়েলের একটি জঙ্গিবিমানও ভূপাতিত হয়েছে। ২০০৬ সালের পর থেকে যুদ্ধে ইসরায়েল এই প্রথম একটি জঙ্গি বিমান খোয়াল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে বৈরিতা সম্প্রতি কয়েকবছরের আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা থেকেও বেড়েছে।
মিউনিখ সম্মেলনে নেতানিয়াহু একটি ম্যাপ দেখিয়েছেন, যেখানে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের বাড়তে থাকা প্রভাব দেখানো হয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের পরাজিত করার পর ওই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করছে ইরান।
“যেসব অঞ্চল আইএস দখলমুক্ত হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেসব অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়ছে। তারা ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শুরু করে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের রাজত্ব বিস্তার করতে চাইছে। তারা ইরান থেকে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন এবং গাজায় ‘ল্যান্ড ব্রিজ’ তৈরি করতে চাইছে।
“তাদের এই কর্মকাণ্ড আমাদের এ অঞ্চলের জন্য খুবই বিপজ্জনক।”