কুর্দি বাহিনী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের সতর্কবার্তা

সিরিয়ার কুর্দি ওয়াইপিজি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করে বাহিনীটিকে সমর্থন না দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2018, 04:56 AM
Updated : 23 Jan 2018, 05:22 AM

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ানের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, সিরিয়ার আফ্রিন থেকে তুর্কি বাহিনীকে হটিয়ে দিতে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে কুর্দি যোদ্ধারা। 

কুর্দিদের ওই মিলিশিয়া বাহিনীটিকে তুরস্কের ভিতরে স্বায়ত্তশাসনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বর্ধিতাংশ ও একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে তুরস্ক।

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাংশের অধিকাংশ স্থান এখন ওয়াইপিজির নিয়ন্ত্রণে। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিরোধী লড়াইয়ে কুর্দিদের এই বাহিনীটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান মিত্র।

আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হয়েছে, এই যুক্তি তুলে ধরে এখন ওয়াইপিজির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রতার অবসান চায় তুরস্ক।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন সতর্ক করে বলেছেন, “আমাদের সীমান্ত বরাবর সিরিয়ায় পিকেকে কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা করলে আমরা সহ্য করবো না।”

শনিবার থেকে আফ্রিনে ওয়াইপিজির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক। তারপর থেকে ৭০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন এক সিরীয় মানবাধিকার আন্দোলনকারী। পাশাপাশি আফ্রিন থেকে কয়েক হাজার বেসামরিক লোক পালিয়ে গেছে বলে খবর হয়েছে।

আফ্রিন থেকে ওয়াইপিজিকে হটিয়ে দিতে ‘অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চ’ শুরু করেছে তুরস্ক। এই অভিযানের অংশ হিসেবে রোববার তুরস্কের স্থল বাহিনী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত অতিক্রম করে, তাদের সঙ্গে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফ্রি সিরিয়ান আর্মির (এফএসএ) বিদ্রোহীরাও যোগ দেয়।

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম জানিয়েছেন, সিরিয়ার ভিতরে ৩০ কিলোমিটার ব্যাপী ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে অভিযানটি চালানো হচ্ছে। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ‘খুব শিগগিরই’ ওয়াইপিজিকে দমন করার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মাসের প্রথমদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ওয়াইপিজির কর্তৃত্বাধীন সিরিয়ার ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) জোটকে নতুন একটি ‘সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী’ গড়তে সহায়তা দেওয়ার কথা বলার পরই আফ্রিনে অভিযানের পরিকল্পনা করে তুরস্ক।

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আইএসের ফিরে আসায় বাধা দিতে ওই ‘সীমান্ত নিরাপত্তা’ বাহিনী গড়ার পরিকল্পনা হয়েছিল।

বিদ্রোহী কমান্ডার মেজর ইয়াসের আব্দুল রহিম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তুরস্কপন্থি প্রায় ২৫ হাজার বিদ্রোহী যোদ্ধা ওই অভিযানে যোগ দিয়েছে। তবে তুরস্কের কতো সৈন্য ওই অভিযানে অংশ নিচ্ছে তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস সোমবার জানিয়েছে, শনিবার থেকে ওইদিন পর্যন্ত ৫৪ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৬ জন কুর্দি যোদ্ধা ও ১৯ জন তুরস্কপন্থি সিরীয় বিদ্রোহী।

পাশাপাশি ২৪ জন বেসামরিকও নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২২ জন তুরস্কের বিমান ও কামানের গোলাবর্ষণে এবং দুইজন কুর্দিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।