মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি তেহরানের

ইরানের প্রধান বিচারপতি আয়াতুল্লাহ সাদেক আমোলি-লারিজানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘লাল দাগ’ অতিক্রম করেছে অভিযোগ করে এর পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2018, 05:25 PM
Updated : 13 Jan 2018, 05:25 PM

শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হুমকি দিলেও মার্কিনের বিরুদ্ধে পাল্টা কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি বলে খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্র ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরানের পরমাণু চুক্তির কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে তাও মানা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তারা।

২০১৫ সালে হওয়া ওই চুক্তির কট্টর সমালোচক ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ‘শেষবারের মতো’ চুক্তিটি অনুমোদন করার ঘোষণা দেন। তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধে চুক্তিতে পরিবর্তন না আনা হলে পরের দফায় এ চুক্তিকে আর অনুমোদন করবেন না বলেও জানান তিনি। 

চুক্তিতে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে তুলে নেওয়ার শর্তে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা কমিয়ে আনতে রাজি হয়েছিল ইরান। ট্রাম্প চান এ বিষয়ে স্থায়ী ফয়সালা।

পারমাণবিক চুক্তির কারণে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখলেও সন্ত্রাসবাদ, মানবাধিকার ইস্যু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার পথ খোলা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার সে পথে হেঁটেই ১৪ ইরানি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।

ওই ১৪ জনের মধ্যে  আয়াতুল্লাহ আমোলি-লারিজোনিও আছেন, যার বিরুদ্ধে কারাবন্দিদের ওপর নির্দয়, অমানবিক ও  অপমানজনক ব্যবহার ও শাস্তির অভিযোগ করেছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, ট্রাম্প প্রশাসনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড লালদাগ অতিক্রম করেছে। এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লংঘন বলেও দাবি করছে তারা।

“ইসলামিক প্রজাতন্ত্র অবশ্যই গুরুতর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাবে,” বিবৃতিতে বলে তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ধারাবাহিকভাবে ইরানের জনগণের প্রতি ‘বৈরি আচরণ’ করছেন বলেও অভিযোগ ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের হুমকি ‘প্রতিবারের মতো এবারও ব্যর্থ হবে’, মন্তব্য তাদের।

এর আগে শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভেদ জারিফ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে বলেছিলেন, পাকাপোক্ত একটি চুক্তিকে ব্যর্থ করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন।

ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করছে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষও।

ফ্রান্স ও জার্মানি বলছে, তারা ইরান চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। রাশিয়ার উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী সার্গেই রায়াবকভও ট্রাম্পের শুক্রবারের মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত নেতিবাচক’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন।  বেইজিং বলেছে, ইরানের পারমাণবিক চুক্তি মুখ থুবড়ে পড়ুক, তা চায় না তারা।